William Shakespeare’s Life and Work in Bangla

William Shakespeare’s Life and Work

কবি ও নাট্যকার উইলিয়াম শেক্সপিয়র ছিলেন ইংরেজি সাহিত্যের সর্বকালের সেরা একজন সাহিত্যিক। তাকে ইংল্যান্ডের জাতীয় কবি বলা হয়ে থাকে। এছাড়া তিনি “বার্ড অন আভন” নামেও পরিচিত। তিনি ছিলেন ইংরেজি সাহিত্যের এলিযাবেদান ও জ্যাকবিয়ান যুগের কবি। তার যে রচনাগুলি পাওয়া গিয়েছে তার মধ্যে রয়েছে ৩৮টি নাটক, ১৫৪টি সনেট, দুটি দীর্ঘ আখ্যানকবিতা এবং আরও কয়েকটি কবিতা। কয়েকটি লেখা শেকসপিয়র অন্যান্য লেখকদের সঙ্গে যৌথভাবেও লিখেছিলেন। তার নাটক প্রতিটি প্রধান জীবিত ভাষায় অনূদিত হয়েছে এবং অপর যে কোনো নাট্যকারের রচনার তুলনায় অধিকবার মঞ্চস্থ হয়েছে।
পৃথিবীর রঙ্গমঞ্চে এ এক বিরল প্রতিভার পুরুষ। উঁচু কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছিল না তার তবুও হাজার গানে মুখর হয়ে উঠল তার কণ্ঠ। এই জগজ্জয়ী কবি ও নাট্যকার দক্ষ ডুবুরির মতো ডুব দিলেন মানব হৃদয়ের গহন গহীনে। সেখানে আবিষ্কার করলেন কত অজানা দেশ-মহাদেশ। পরীক্ষা করলেন মানুষের অন্তরাত্মা নিয়ে। তাঁর চিন্তা-চেতনা, বিশ্বাস মূল্যবোধ, দুঃখ-হতাশা-নিরাশা, সংস্কার, সংকট, জীবনবোধ, আত্ম-উপলব্ধি, জীবন জিজ্ঞাসা, জগৎ ভাবনা এসব নিয়ে তিনি তাঁর সাহিত্য সাধনার ত্রিশ বছর নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন।
এই মনীষাঋদ্ধ কবির জন্ম হয় একটি আলোর জন্মরূপে ১৫৬৪ সালের ২৩ শে এপ্রিল, ইংল্যান্ডের ওয়ারউইকশায়ারের স্ট্র্যাটফোর্ড-অন আভন শহরে। তাঁর বাবার নাম জন শেক্সপিয়র এবং মা’র নাম মেরী আর্ডেন। বাবা করতেন দস্তানা তৈরি ও কৃষি কাজ। ব্যবসায়ী হিসেবে মোটামুটি ভাল মানের ব্যবসায়ী ছিলেন। এছাড়া জন ছিলেন একজন পৌর প্রতিনিধি। আর শেকসপীয়রের মা মেরী আর্ডেন ছিলেন পার্শ্ববর্তী গ্রামের এক ভূস্বামী পরিবারের কন্যা। মা-বাবার আট সন্তানের মধ্যে শেক্সপিয়র হচ্ছেন তৃতীয় সন্তান। আর পুত্রদের মধ্যে শেক্সপিয়র বড়। মা-বাবার আট সন্তানের মধ্যে শেক্সপিয়র হচ্ছেন তৃতীয় সন্তান। আর পুত্রদের মধ্যে শেক্সপিয়র বড়।
শেকসপিয়রের জন্ম ও বেড়ে ওঠা স্ট্যাটফোর্ড অন-অ্যাভনে। মাত্র আঠারো বছর বয়সে তিনি রিচার্ড হ্যাথাওয়ের কন্যা অ্যানি হ্যাথাওয়েকে বিবাহ করেন। অ্যানির গর্ভে শেকসপিয়রের তিনটি সন্তান হয়েছিল। এঁরা হলেন সুসান এবং হ্যামনেট ও জুডিথ নামে দুই যমজ। ১৫৮৫ থেকে ১৫৯২ সালের মধ্যবর্তী সময়ে তিনি অভিনেতা ও নাট্যকার হিসেবে লন্ডনে যথেষ্ট খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। লর্ড চেম্বারলেইন’স ম্যান নামে একটি নাট্যকোম্পানির তিনি ছিলেন সহ-সত্ত্বাধিকারী। এই কোম্পানিটিই পরবর্তীকালে কিং’স মেন নামে পরিচিত হয়। ১৬১৩ সালে তিনি নাট্যজগৎ থেকে সরে আসেন এবং স্ট্র্যাটফোর্ডে ফিরে যান। তিন বছর বাদে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়েছিল। শেকসপিয়রের ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে নথিভুক্ত তথ্য বিশেষ পাওয়া যায় না। তাঁর চেহারা, যৌনপ্রবৃত্তি, ধর্মবিশ্বাস, এমনকি তাঁর নামে প্রচলিত নাটকগুলি তাঁরই লেখা নাকি অন্যের রচনা তা নিয়ে বিস্তর গবেষণা হয়েছে এবং হচ্ছে।
১৫৮৫-৮৬ সালের দিকে তিনি লন্ডনে পাড়ি জমান। তরুণ শেক্সপিয়র লন্ডন শহরে এসে আর্থিক প্রতিষ্ঠা অর্জনের জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করেন। ছয় বছর হাড়ভাঙ্গা শ্রম দিলেন। অবশেষে তার আপন শ্রম আর প্রতিভার জোরে স্বীকৃতি পেলেন অভিনেতারূপে লন্ডনের মতো অত বড় শহরের নাট্যাঙ্গনে। ১৫৯৪ সালের শেষের দিকটায় শেক্সপিয়র দেখা যায় লন্ডনের তৎকালীন খ্যাতিমান নাট্যদল লর্ড চেম্বার লেইনের সদস্য হিসেবে। এসময়ে অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি নাটক রচনাও করতে শুরু করেন। অল্প কালের মধ্যেই শেক্সপিয়র নাট্যামোদী তথা সর্বস্তরের মানুষের কাছে জনপ্রিয় লেখক হয়ে উঠেন। আর্থিক দিক থেকে শেকসপীয়র তখন প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি। ১৫৯৩ সালে শেক্সপিয়র স্ট্রাটফোর্ডে একটি বিশাল বাড়ি ক্রয় করেন যেটির নাম ছিল নিউ প্লেস। ১৬১০ সালে শেক্সপিয়র লন্ডন ছেড়ে স্ট্রাটফোর্ডের এ বাড়িতে এসে উঠেন। লন্ডন ত্যাগ করেছেন বটে তবে লন্ডনে নাট্যাঙ্গনের সহকর্মীদের সাথে তার যোগাযোগ ছিল। ১৬১৩ সালে অষ্টম হেনরী নাটকটির অভিনয় চলাকালে তাঁর গ্লোব থিয়েটার আগুনে ভস্মীভূত হয়ে যায়। এ দুর্ঘটনার মাত্র তিন বছর পর ১৬১৬ সালের ২৩ শে এপ্রিল এ বিশ্বজয়ী কবি ও নাট্যকারের জীবনাবসান ঘটে মাত্র বায়ান্ন বছর বয়সে। শেক্সপিয়রের ৫২ বছরের নাতিদীর্ঘ জীবনে সাহিত্য সাধনার কাল ত্রিশ বছরেরও কম।

তার বিখ্যাত নাটকগুলো হলো:

  1. The Comedy of Errors (1593);
  2. The Taming of the Shrew (1594);
  3. Love’s Labour’s Lost (1594);
  4. Romeo and Juliet (1594);
  5. A Midsummer Night’s Dream (1595);
  6. The Merchant of Venice (1596):
  7. Julius Caesar (1599);
  8. As You Like It (1600);
  9. Hamlet (1601);
  10. Measure for Measure (1604);
  11. Othello (1604);
  12. Macbeth (1605);
  13. King Lear (1505);
  14. Antony and Cleopatra (1606);
  15. The Tempest (1611).
শেকসপিয়রের পরিচিত রচনাগুলির অধিকাংশই মঞ্চস্থ হয়েছিল ১৫৮৯ থেকে ১৬১৩ সালের মধ্যবর্তী সময়ে। তাঁর প্রথম দিকের রচনাগুলি ছিল মূলত মিলনান্তক ও ঐতিহাসিক নাটক। ষোড়শ শতাব্দীর শেষভাগে তাঁর দক্ষতায় এই দুটি ধারা শিল্পসৌকর্য ও আভিজাত্যের মধ্যগগনে উঠেছিল। এরপর ১৬০৮ সাল পর্যন্ত তিনি প্রধানত কয়েকটি বিয়োগান্ত নাটক রচনা করেন। এই ধারায় রচিত তাঁর হ্যামলেট, কিং লিয়ার ও ম্যাকবেথ ইংরেজি ভাষার কয়েকটি শ্রেষ্ঠ সাহিত্যকীর্তি। জীবনের শেষ পর্বে তিনি ট্র্যাজিকমেডি রচনায় আত্মনিয়োগ করেছিলেন। এই রচনাগুলি রোম্যান্স নামেও পরিচিত। এই সময় অন্যান্য নাট্যকারদের সঙ্গে যৌথভাবেও কয়েকটি নাটকে কাজ করেন তিনি।
তাঁর জীবদ্দশায় প্রকাশিত নাটকগুলির প্রকাশনার মান ও প্রামাণ্যতা সর্বত্র সমান ছিল না। ১৬২৩ সালে তাঁর দুই প্রাক্তন নাট্যসহকর্মী দুটি নাটক বাদে শেকসপিয়রের সমগ্র নাট্যসাহিত্যের ফার্স্ট ফোলিও প্রকাশ করেন।
তাঁর সমকালে শেকসপিয়র ছিলেন একজন সম্মানিত কবি ও নাট্যকার। কিন্তু মৃত্যুর পর তাঁর খ্যাতি হ্রাস পেয়েছিল। অবশেষে ঊনবিংশ শতাব্দীতে খ্যাতির শীর্ষে ওঠেন। রোম্যান্টিকেরা তাঁর রচনার গুণগ্রাহী ছিলেন। ভিক্টোরিয়ানরা রীতিমতো তাঁকে পূজা করতেন; জর্জ বার্নার্ড শ’র ভাষায় যা ছিল চারণপূজা (“bardolatry”)। বিংশ শতাব্দীতেও গবেষণা ও নাট্য উপস্থাপনার বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে তার রচনাকে পুনরাবিষ্কার করার চেষ্টা করা হয়। আজও তার নাটক অত্যন্ত জনপ্রিয় ও বহুচর্চিত। সারা বিশ্বের নানা স্থানের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নানা আঙ্গিকে এই নাটকগুলি মঞ্চস্থ ও ব্যাখ্যাত হয়ে থাকে।

Author

  • William Shakespeare

    কবি ও নাট্যকার উইলিয়াম শেক্সপিয়র ছিলেন ইংরেজি সাহিত্যের সর্বকালের সেরা একজন সাহিত্যিক। তাকে ইংল্যান্ডের জাতীয় কবি বলা হয়ে থাকে। এছাড়া তিনি “বার্ড অন আভন” নামেও পরিচিত। তিনি ছিলেন ইংরেজি সাহিত্যের এলিযাবেদান ও জ্যাকবিয়ান যুগের কবি। তার যে রচনাগুলি পাওয়া গিয়েছে তার মধ্যে রয়েছে ৩৮টি নাটক, ১৫৪টি সনেট, দুটি দীর্ঘ আখ্যানকবিতা এবং আরও কয়েকটি কবিতা। কয়েকটি লেখা শেকসপিয়র অন্যান্য লেখকদের সঙ্গে যৌথভাবেও লিখেছিলেন। তার নাটক প্রতিটি প্রধান জীবিত ভাষায় অনূদিত হয়েছে এবং অপর যে কোনো নাট্যকারের রচনার তুলনায় অধিকবার মঞ্চস্থ হয়েছে।

    View all posts