Table of Contents
To a Skylark by By Percy Bysshe Shelley
“To a Skylark” কবিতাটি ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় এবং সমৃদ্ধ রোমান্টিক কবিতা। এটি রচনা করেছেন বিখ্যাত ইংরেজি কবি পার্সি বিশি শেলি (Percy Bysshe Shelley), যিনি রোমান্টিক যুগের একজন প্রধান কবি হিসেবে পরিচিত। এই কবিতাটি ১৮২০ সালে লেখা হয় এবং একই বছরে এটি প্রথম প্রকাশিত হয়। কবিতাটি শেলির গভীর আবেগ, প্রকৃতির সৌন্দর্যের প্রতি তার ভালোবাসা এবং আধ্যাত্মিক চিন্তাভাবনার এক নিখুঁত প্রকাশ।
শেলি তার অন্যান্য কবিতার মতো এখানে প্রকৃতির এক চিরন্তন এবং রহস্যময় সত্তাকে কেন্দ্র করে কবিতাটি রচনা করেছেন। স্কাইলার্ক পাখিটি এখানে কেবল একটি পাখি নয়, বরং এটি প্রকৃতির মুক্ত আত্মার প্রতীক, যা আনন্দ এবং সৃষ্টিশীলতাকে প্রকাশ করে। কবিতাটিতে শেলি নিজেই বক্তার ভূমিকায় রয়েছেন এবং এটি তার জীবনের একটি বাস্তব অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে লেখা। যেমনটি আমরা “Ode to the West Wind”-এও দেখতে পাই, শেলির প্রকৃতির সঙ্গে এক অভ্যন্তরীণ সংযোগ এবং আধ্যাত্মিক দৃষ্টিভঙ্গি তার সৃষ্টিতে বারবার ফুটে উঠেছে।
Structure and Form (গঠন এবং কাঠামো)
পার্সি বিশি শেলির “To a Skylark” কবিতাটি একটি একুশ-স্তবকের ওড (Ode), যা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একই ছন্দোবদ্ধ রীতিতে লেখা হয়েছে। কবিতার ছন্দরীতি হলো ABABB, যা প্রতিটি স্তবকের শেষ শব্দের ভিন্নতা থাকা সত্ত্বেও নির্দিষ্ট প্যাটার্ন মেনে চলে।
প্রতিটি স্তবকের প্রথম চারটি লাইন trochaic trimeter ছন্দে লেখা হয়েছে। Trochaic trimeter বলতে বোঝানো হয়েছে, যেখানে প্রতিটি সিলেবলে একটি জোরালো (stressed) শব্দের পর একটি দুর্বল (unstressed) শব্দ থাকে। প্রতিটি লাইন তিনটি এই ধরনের মাত্রা বা বিট নিয়ে গঠিত (trimeter)। ফলে কবিতার এই অংশে একটি সুনিয়ন্ত্রিত এবং ছন্দময় ধারা দেখা যায়।
পঞ্চম লাইনটি কবিতার বাকি চারটি লাইনের চেয়ে লম্বা এবং এটি লেখা হয়েছে iambic hexameter ছন্দে। Iambic hexameter বলতে বোঝানো হয়, যেখানে প্রতিটি বিটে একটি দুর্বল (unstressed) শব্দের পর একটি জোরালো (stressed) শব্দ থাকে এবং প্রতিটি লাইন ছয়টি এই ধরনের মাত্রা বা বিট নিয়ে গঠিত। এই লম্বা লাইনগুলো কবিতায় একটি ভিন্ন ছন্দময় ধারা তৈরি করে, যা পুরো কবিতার গঠনে বৈচিত্র্য আনলেও ছন্দের সামগ্রিক গঠন অটুট রাখে।
এই নির্দিষ্ট কাঠামো এবং ছন্দময় বিন্যাস কবিতার সুরেলা প্রকৃতিকে আরও উজ্জ্বল করে তোলে এবং স্কাইলার্কের সঙ্গীতের স্বতঃস্ফূর্ততাকে শিল্পময় রূপে তুলে ধরতে সাহায্য করে।
Literary Devices (সাহিত্যিক অলংকারসমূহ)
পার্সি বিশি শেলির “To a Skylark” কবিতায় বিভিন্ন সাহিত্যিক অলংকার ব্যবহার করা হয়েছে, যা কবিতাটিকে আরও অর্থবহ, প্রাণবন্ত এবং আবেগময় করেছে। নিচে প্রধান কয়েকটি অলংকার এবং তাদের ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করা হলো:
১. চিত্রকল্প (Imagery)
চিত্রকল্প এমন একটি অলংকার যা পাঠকের মনে একটি স্পষ্ট এবং দৃশ্যমান ছবি তৈরি করে। শেলি বিভিন্ন স্থানে চিত্রকল্প ব্যবহার করেছেন, যা তার অনুভূতিগুলোকে প্রকৃতির রূপকের মাধ্যমে আরও বেশি জীবন্ত করে তুলেছে। উদাহরণস্বরূপ:
“Like a cloud of fire; / The blue deep thou wingest.”
এখানে স্কাইলার্ককে একটি “আগুনের মেঘের” মতো বলা হয়েছে, যা আকাশের গভীর নীলের উপর দিয়ে উড়ছে। এই চিত্রকল্প পাখির গতি, শক্তি এবং উজ্জ্বলতাকে স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তুলেছে।
২. সম্বোধন (Apostrophe)
সম্বোধন তখন ঘটে যখন কবি এমন কোনো ব্যক্তি বা বস্তুকে সরাসরি সম্বোধন করেন, যে হয়তো তার কথা শুনতে পায় না বা সাড়া দিতে পারে না। এই কবিতায় শেলি সরাসরি স্কাইলার্ককে সম্বোধন করেছেন এবং তাকে “blithe Spirit” বলে অভিহিত করেছেন।
“Hail to thee, blithe Spirit!”
এখানে স্কাইলার্ককে একটি প্রাণবন্ত এবং আনন্দময় আত্মা হিসেবে সম্বোধন করা হয়েছে, যা প্রকৃতির চিরন্তন আনন্দের প্রতীক।
৩. অনুপ্রাস (Alliteration)
অনুপ্রাস তখন ঘটে যখন একাধিক শব্দের শুরুতে একই ধ্বনি বা ব্যঞ্জনধ্বনি পুনরাবৃত্তি হয়। এই অলংকার কবিতার ছন্দ ও সুরকে আরও মধুর করে তোলে। উদাহরণস্বরূপ:
- “Heaven” এবং “heart” (প্রথম স্তবকে)
- “still” এবং “springest” (দ্বিতীয় স্তবকে)
এই শব্দগুলোর পুনরাবৃত্তি শুধু ছন্দময়তা তৈরি করেনি, বরং কবিতার ভাব এবং সুরে মাধুর্য এনেছে।
৪. উপমা (Simile)
শেলি স্কাইলার্কের তুলনা করেছেন প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদানের সঙ্গে, যা কবিতায় উপমার মাধ্যমে ফুটে উঠেছে। যেমন:
- “Like a high-born maiden”—স্কাইলার্ককে এমন এক উচ্চবংশীয় নারীর সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে, যিনি প্রেমের গান গেয়ে চলেছেন।
- “Like a glow-worm golden”—এখানে স্কাইলার্কের সুরকে জোনাকির আলো ছড়ানোর সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে, যা প্রকৃতির শান্ত এবং সুন্দর মুহূর্তকে তুলে ধরে।
৫. প্রতীক (Symbolism)
পুরো কবিতায় স্কাইলার্ক একটি প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে, যা প্রকৃত আনন্দ, মুক্তি এবং সৃষ্টিশীলতার প্রতীক। এটি শুধুমাত্র একটি পাখি নয়, বরং এমন একটি সত্তা যা মানুষের সীমাবদ্ধতার বাইরে চিরন্তন সুখে অবস্থান করে।
Bangla Summary
কবিতার শুরুতে শেলি একজন বক্তার ভূমিকায় স্কাইলার্ক পাখিটিকে আকাশে উড়তে দেখেন। তিনি স্পষ্টভাবে পাখিটির গান শুনতে পান। স্কাইলার্কের গান “unpremeditated” বা স্বতঃস্ফূর্ত, যা পূর্বপরিকল্পিত নয় কিন্তু অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর। পাখিটির সঙ্গীত এবং তার মেঘের ভেতর দিয়ে আকাশে হারিয়ে যাওয়ার দৃশ্য শেলিকে মুগ্ধ করে। যদিও তিনি আর পাখিটিকে দেখতে পান না, কিন্তু তার সুর এখনো শোনা যায় এবং তার উপস্থিতি অনুভব করা যায়। স্কাইলার্ক এখানে একটি পরিপূর্ণ, সীমাহীন আনন্দের প্রতীক, যা শেলি গভীরভাবে খুঁজে বেড়াচ্ছেন।
পরবর্তী স্তবকগুলোতে কবি বিভিন্ন রূপকের সাহায্যে পাখিটির প্রকৃতি এবং সঙ্গীতের প্রকৃত উৎস সম্পর্কে ধারণা করার চেষ্টা করেন। তিনি স্কাইলার্ককে “high-born maiden” অর্থাৎ এক রাজকুমারীর সঙ্গে তুলনা করেছেন, যিনি তার প্রেমিককে সঙ্গীতের মাধ্যমে মুগ্ধ করছেন। আবার স্কাইলার্ককে বসন্তের “vernal showers” বা বৃষ্টির সঙ্গে তুলনা করেছেন, যা ফুল এবং গাছকে প্রাণবন্ত করে তোলে। স্কাইলার্কের সুরকে “rainbow clouds” বা রংধনুর মেঘের মতো আনন্দময় বলা হয়েছে, যা পৃথিবীর সমস্ত “Joyous” বা আনন্দময় জিনিসের চূড়ান্ত রূপ।
এরপর কবি স্কাইলার্কের প্রতি একটি প্রশ্ন তোলেন—এই অসাধারণ গান গাওয়ার পেছনে কোন অনুপ্রেরণা কাজ করে? তিনি জানতে চান, পাখির গান কি “fields, or waves, or mountains” থেকে অনুপ্রাণিত? নাকি “shapes of sky or plain” (আকাশ বা প্রান্তরের আকৃতি) থেকে এর সুর জন্ম নেয়? যাই হোক না কেন, শেলি স্বীকার করেন যে এমন কিছুই তিনি কখনো দেখেননি যা তার নিজের কণ্ঠ থেকে এই ধরনের সুর বের করতে পারে।
এরপর কবি ব্যাখ্যা করেন যে, এই পাখির এমন গান গাওয়ার জন্য অবশ্যই তাকে দুঃখ বা বিরক্তি থেকে মুক্ত থাকতে হবে। তার জীবনে কখনো “annoyance” বা মানসিক অশান্তি স্পর্শ করেনি। স্কাইলার্ক এমন এক সত্তা, যা জীবনের বাইরেও কিছু দেখতে পায়, মৃত্যুকে বোঝে, কিন্তু তাতে কোনো উদ্বেগ অনুভব করে না। এই কারণেই মানুষের পক্ষে স্কাইলার্কের মতো নির্মল আনন্দে পৌঁছানো সম্ভব নয়। কারণ আমরা সবসময় এমন কিছুর জন্য আকুল থাকি যা আমাদের কাছে নেই এবং এমনকি আমাদের “sweetest songs” বা প্রিয়তম গানগুলোর মধ্যেও থাকে “saddest thought[s]” বা দুঃখের মিশ্রণ।
কবিতার শেষ অংশে, শেলি স্কাইলার্কের কাছে অনুরোধ করেন যে তাকে অন্তত “half the gladness” বা আনন্দের অর্ধেকটুকু শিখিয়ে দিক যা পাখিটির মনের মধ্যে বিদ্যমান। যদি শেলি এই সামান্য পরিমাণ আনন্দও পেতেন, তবে তার কণ্ঠ থেকে “harmonious madness” বা সংগীতময় উন্মাদনা বের হয়ে আসতো। তার এই নতুন সুর এমন শক্তিশালী হতো যে পৃথিবী তাকে ঠিক ততটাই গভীর মনোযোগ দিয়ে শুনতো, যতটা মনোযোগ দিয়ে তিনি এখন স্কাইলার্কের গান শুনছেন।
সার্বিকভাবে, “To a Skylark” কবিতাটি এক মানুষের চিরন্তন সুখের সন্ধান এবং প্রকৃতির সাথে সেই অন্তর্নিহিত সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা নিয়ে লেখা। শেলি তার অভিজ্ঞতার মাধ্যমে এই উপলব্ধিতে পৌঁছান যে প্রকৃত আনন্দ মানুষের সীমিত জীবনবোধের বাইরে প্রকৃতির একটি চিরন্তন সত্তার মধ্যে লুকিয়ে থাকে। তিনি এই কবিতার মাধ্যমে আমাদের শেখাতে চান যে প্রকৃতির কাছ থেকে শেখা গেলে হয়তো আমরা জীবনের গভীরতম আনন্দ ও মুক্তির সন্ধান পেতে পারি।
Read More: Percy Bysshe Shelley’s Poetry
Details Bangla Analysis of the Poem “To a Skylark”
এই কবিতার বিশেষ তাৎপর্য হলো, এটি মানবমনের গভীর আকাঙ্ক্ষাকে তুলে ধরে, যা আমাদের প্রতিদিনের জীবনে প্রাসঙ্গিক। শেলি এক ধরনের “quick fix” বা চটজলদি সমাধানের আশায় থাকলেও বুঝতে পারেন যে প্রকৃত আনন্দ সহজে ধরা দেয় না। স্কাইলার্কের গান তাকে শেখায় যে প্রকৃত সুখ কোনো বাহ্যিক উপায়ে নয়, বরং গভীর আত্মিক উপলব্ধির মধ্য দিয়ে অর্জন করা যায়। এই শেষ স্তবকে শেলি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেন যে প্রকৃতির সৌন্দর্য এবং সুরই সেই চিরন্তন আনন্দের দিক-নির্দেশনা দিতে পারে, যা আমরা সকলেই খুঁজি।
প্রথম স্তবক
Hail to thee, blithe Spirit!
Bird thou never wert,
That from Heaven, or near it,
Pourest thy full heart
In profuse strains of unpremeditated art.
“To a Skylark” কবিতার শুরুতেই কবি পি. বি. শেলি আকাশের স্কাইলার্ক পাখিটিকে দেখে মুগ্ধ হয়ে সম্ভাষণ জানান—“Hail to thee”। এটি সাধারণ সম্ভাষণ নয়, বরং একটি গভীর শ্রদ্ধার বহিঃপ্রকাশ। কবি এখানে কোনো সাধারণ পাখিকে সম্ভাষণ জানাননি; তার চোখে এই স্কাইলার্ক হলো আনন্দ, সুখ ও মুক্ত আত্মার প্রতীক, যাকে তিনি “blithe Spirit” বলে অভিহিত করেছেন। “Blithe” শব্দের অর্থ হলো প্রফুল্ল এবং সুখী, যা এই স্কাইলার্ককে একটি পরম আনন্দময় সত্তারূপে প্রতিষ্ঠিত করে।
শেলির দৃষ্টিতে এই পাখি কেবল একটি প্রাণী নয়, বরং এক ধরনের আত্মিক অভিজ্ঞতার প্রতীক, যার অস্তিত্ব যেন দৈবধাম বা স্বর্গীয় কোনো স্থান থেকে এসেছে। কবি বলেন, স্কাইলার্ক যেন স্বর্গ থেকে বা তার কাছাকাছি কোনো স্থান থেকে উড়ে এসেছে এবং তার হৃদয় থেকে অবিরাম সুরের জোয়ার ঢেলে দিচ্ছে। এই সুরগুলো কবির ভাষায় “profuse strains” বা প্রচুর আবেগ ও সৃষ্টিশীলতায় ভরপুর। তবে এই সঙ্গীতের বিশেষত্ব হলো এটি সম্পূর্ণ স্বতঃস্ফূর্ত এবং কৃত্রিমতাহীন। “Unpremeditated art” বলতে শেলি বুঝিয়েছেন সেই সঙ্গীত, যা পূর্বপরিকল্পিত নয় এবং যা প্রকৃতির আপন সৌন্দর্যের নিখুঁত বহিঃপ্রকাশ।
স্কাইলার্কের এই স্বতঃস্ফূর্ত সঙ্গীত শুধু মাত্রিক সুর নয়, বরং এটি শেলির কাছে এক অসীম শিল্পের উৎস। তার কাছে এই গান এতটাই মনোমুগ্ধকর যে এটি পরিকল্পিত শিল্পের চেয়ে বেশি মূল্যবান। এটি যেন প্রকৃতির নিজস্ব সুর, যা মানুষের বানানো কোনো নিয়ম বা কাঠামোর অধীনে নয়। শেলির দৃষ্টিতে এই গান জীবনের আনন্দময় মুহূর্তগুলোর মতো, যা অপ্রত্যাশিতভাবে আসে কিন্তু গভীরতর অর্থ বহন করে।
এই প্রথম স্তবকের মাধ্যমে কবি প্রকৃতির সাথে মানুষের একাত্মতার ধারণা তুলে ধরেছেন এবং বোঝাতে চেয়েছেন যে প্রকৃতির সরল সৌন্দর্যের মধ্যে এমন এক অব্যক্ত মাধুর্য লুকিয়ে আছে, যা কেবল হৃদয় দিয়ে অনুভব করা যায়। Skipper Skylark যেন সেই অসীম আনন্দময়তার এক আকাশে মুক্ত প্রতীক, যা মানুষের দৈনন্দিন জীবনের কৃত্রিমতাকে ছাপিয়ে যায়।
দ্বিতীয় স্তবক
Higher still and higher
From the earth thou springest
Like a cloud of fire;
The blue deep thou wingest,
And singing still dost soar, and soaring ever singest.
দ্বিতীয় স্তবকে শেলি স্কাইলার্কের আরোহণের গতিকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন। তিনি দেখছেন, পাখিটি থামছে না; বরং “Higher still” অর্থাৎ ক্রমাগত উপরের দিকে উড়ছে। এটি যেন মাটি থেকে হঠাৎ ঝাঁপ দিয়ে উঠেছে, যেন এক অগ্নিকুণ্ডের মতো ঝলসে উঠেছে—“Like a cloud of fire।”
অগ্নিকুণ্ড বা জ্বলন্ত মেঘের সাথে তুলনা করে কবি বোঝাতে চেয়েছেন স্কাইলার্কের উড্ডয়নের শক্তি, উজ্জ্বলতা এবং অপ্রতিরোধ্য গতি। এই তুলনাটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ কারণ এটি শুধু পাখিটির গতিই নয়, বরং তার অন্তর্নিহিত প্রাণশক্তি এবং উজ্জ্বলতারও প্রতীক। পাখিটি যেন কোনো বাধা মানছে না এবং হয়তো সেই স্বর্গের দিকেই ফিরে যাচ্ছে যেখান থেকে এটি এসেছে।
পাখিটি আকাশের “blue deep” বা নীল বিশালতার মাঝে ডানা মেলে দিয়ে উড়ছে, কিন্তু শুধু উড়ছে না—পাখিটি গান গেয়ে চলেছে। এই গান এবং উড্ডয়ন একসাথে চলছে, এবং কবি এই বিষয়টি গভীরভাবে লক্ষ্য করেছেন। স্কাইলার্ক “still dost soar” অর্থাৎ উড়েই চলেছে এবং “soaring ever singest”—উড়তে উড়তে গাইছে।
এই একই সময়ে গান গাওয়া এবং উড়বার মাধ্যমে স্কাইলার্ক প্রকৃতির এক অসাধারণ শক্তির উদাহরণ হয়ে ওঠে। শেলির দৃষ্টিতে এটি কেবল একটি দৈহিক ক্রিয়া নয়, বরং একটি আত্মিক যাত্রা। পাখিটির এই গান যেন তার উড্ডয়নেরই প্রতিফলন, যা আনন্দ, মুক্তি এবং অসীমতার প্রকাশ ঘটায়। স্কাইলার্কের এই দিকটি মানুষের জন্য এক অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করে, কারণ এটি দেখায় কিভাবে জীবনের চূড়ান্ত সীমার দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময়ও নিজের সৃষ্টিশীলতাকে বহাল রাখা সম্ভব।
শেলির এই স্তবকটি প্রকৃতির গতিশীলতা, সৌন্দর্য এবং মানব আত্মার উচ্চাকাঙ্ক্ষার মধ্যে একটি সংযোগ স্থাপন করে, যা পাঠকের মনেও নতুন ভাবনার উদ্রেক ঘটায়।
তৃতীয় স্তবক
In the golden lightning
Of the sunken sun,
O’er which clouds are bright’ning,
Thou dost float and run;
Like an unbodied joy whose race is just begun.
তৃতীয় স্তবকে শেলি এক মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক দৃশ্য উপস্থাপন করেছেন, যেখানে স্কাইলার্ক পাখিটি “golden lightning” বা সোনালি আলোর ভেতর দিয়ে উড়ছে। এখানে “sunken sun” বলতে সূর্য অস্তমিত হওয়ার সময়ের আলোকে বোঝানো হয়েছে। সন্ধ্যা বা সূর্যাস্তের এই সময়কে কবি বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন কারণ এটি প্রকৃতির এক যাদুকর মুহূর্ত, যখন আকাশে সোনালি ও লালাভ আভা ছড়িয়ে পড়ে, যা সমস্ত পরিবেশকে আরও রহস্যময় ও মুগ্ধকর করে তোলে।
স্কাইলার্ক পাখিটি মেঘের ওপর দিয়ে উড়ছে, যেগুলো সূর্যের আলোয় উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে—“clouds are bright’ning।” কবির বর্ণনায় এটি এমনভাবে ভেসে বেড়াচ্ছে যে মনে হচ্ছে এটি আকাশে দৌড়াচ্ছে এবং ভাসছে—“float and run।”
কবির দৃষ্টিতে এই পাখিটি কেবল একটি দেহধারী জীব নয়; এটি যেন “unbodied joy” বা অদৃশ্য আনন্দের প্রতীক। এই আনন্দকে দেহের সীমায় আবদ্ধ করা সম্ভব নয়। এটি মুক্ত, অসীম এবং ক্লান্তিহীন। কবি বলেছেন, এই আনন্দের যাত্রা কেবল শুরু হয়েছে—“whose race is just begun।” এর মানে হলো, স্কাইলার্কের এই সঙ্গীত এবং উড্ডয়ন চিরন্তন; এটি কোনো সীমাবদ্ধতা বা অবসানের মধ্যে আটকে নেই।
এই স্তবকটি মূলত প্রকৃতির সৌন্দর্যের সাথে আধ্যাত্মিক আনন্দের সংযোগ ঘটায়। স্কাইলার্ক যেন সেই অন্তর্নিহিত আত্মার প্রতীক, যা অবিরামভাবে উঁচুতে উঠতে থাকে এবং আনন্দে ভরে থাকে। শেলির দৃষ্টিতে, এই পাখির উড্ডয়ন মানুষকে শেখায় যে প্রকৃত আনন্দ দেহের বাইরের কোনো বস্তু নয়; বরং এটি এক অভ্যন্তরীণ মুক্তির প্রতিচ্ছবি, যা জীবনকে অর্থবহ করে তোলে।
Read More From Romantic Poetry
চতুর্থ স্তবক
The pale purple even
Melts around thy flight;
Like a star of Heaven,
In the broad day-light
Thou art unseen, but yet I hear thy shrill delight.
চতুর্থ স্তবকে শেলি প্রকৃতির সূক্ষ্ম পরিবর্তন এবং স্কাইলার্কের সেই পরিবর্তনের মধ্যে লুকিয়ে যাওয়া নিয়ে গভীর অনুভূতির প্রকাশ করেছেন। “The pale purple even” বলতে তিনি সন্ধ্যার আকাশের বিবর্ণ বেগুনি আভাকে নির্দেশ করেছেন। এটি সূর্য অস্ত যাওয়ার সময় আকাশে সৃষ্ট এক নরম, ম্লান আলো, যা ধীরে ধীরে অন্ধকারের দিকে মিশে যাচ্ছে। স্কাইলার্ক এই ম্লান আভায় উড়তে উড়তে যেন সেই আলোয় বিলীন হয়ে যাচ্ছে—“Melts around thy flight।”
এই স্তবকে স্কাইলার্কের এই লুকিয়ে যাওয়ার দৃশ্যকে শেলি তুলনা করেছেন আকাশের তারার সাথে। দিনের আলোতে যেমন তারা দেখা যায় না, কিন্তু আমরা জানি তারা ঠিকই আকাশে উপস্থিত রয়েছে, তেমনি স্কাইলার্কও আকাশে অদৃশ্য হয়ে গেছে, কিন্তু তার সঙ্গীত বা ‘shrill delight’ শেলির কানে স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে। কবি এখানে তারাকে আকাশের আধ্যাত্মিক উপমা হিসেবে ব্যবহার করেছেন, এবং এই তুলনা প্রকৃতির অসীম রহস্যের প্রতি তার বিস্ময় এবং শ্রদ্ধাকে প্রকাশ করে।
“Like a star of Heaven” উপমাটি আরও গভীর তাৎপর্য বহন করে। এটি শুধু পাখির অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার বিষয়টিই তুলে ধরে না, বরং বোঝায় যে স্কাইলার্ক প্রকৃতপক্ষে আকাশের কোনো দেবীয় সত্তা বা “Heaven”-এর অংশ হতে পারে। যদিও শেলি স্কাইলার্ককে দেখতে পাচ্ছেন না, তবুও পাখির সুর তার মনের গভীরে এক বিশেষ আনন্দের ধারা সৃষ্টি করছে।
এই স্তবকের মাধ্যমে কবি বোঝাতে চেয়েছেন যে প্রকৃতির সৌন্দর্য এবং আনন্দ শুধুমাত্র চোখে দেখার বিষয় নয়; এটি হৃদয় দিয়ে অনুভব করার বিষয়। যেমন আমরা দিনে আকাশের তারাকে দেখতে পাই না কিন্তু তাদের অস্তিত্ব বিশ্বাস করি, তেমনি প্রকৃতির অনেক সৌন্দর্য আমরা সরাসরি দেখতে না পেলেও তা আমাদের অভ্যন্তরীণ অনুভূতির মাধ্যমে উপলব্ধি করা সম্ভব। স্কাইলার্কের গান এখানেই এমন একটি নিদর্শন, যা শেলির কাছে আধ্যাত্মিক আনন্দ এবং অবিরাম সৃষ্টির প্রতীক।
পঞ্চম স্তবক
Keen as are the arrows
Of that silver sphere,
Whose intense lamp narrows
In the white dawn clear
Until we hardly see, we feel that it is there.
পঞ্চম স্তবকে শেলি স্কাইলার্ককে চাঁদের আলো বা “silver sphere”-এর সাথে তুলনা করেছেন। এখানে কবি প্রকৃতির সৌন্দর্য ও অনুভূতিপূর্ণ অভিজ্ঞতার মধ্যে এক অনন্য যোগসূত্র তৈরি করেছেন, যা তার কবিতার কেন্দ্রীয় ভাবনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
স্কাইলার্কের সুর এবং তার প্রভাবকে তিনি চাঁদের তীক্ষ্ণ আলো বা “arrows of light”-এর মতো বলছেন, যা রাতের আকাশে বিস্তার লাভ করে। রাতের সময় চাঁদের আলো অত্যন্ত উজ্জ্বল এবং তীব্র—“intense lamp”—কিন্তু ভোরের আলো বা “white dawn clear” আসার সঙ্গে সঙ্গে সেই তীব্রতা কমে যায়। দিনের আলোর প্রভাবে চাঁদকে আর স্পষ্টভাবে দেখা যায় না, কিন্তু তার অস্তিত্ব অনুভব করা যায়।
এই তুলনার মাধ্যমে শেলি বোঝাতে চেয়েছেন যে স্কাইলার্কের গানও একই ধরনের অনুভূতির জন্ম দেয়। যদিও পাখিটিকে দেখা যাচ্ছে না, তার সুরের প্রতিধ্বনি মানুষের হৃদয়ে গভীর প্রভাব ফেলছে। চাঁদ যেমন দিনে অদৃশ্য হয়ে গেলেও আমাদের মন বলে দেয় যে এটি সেখানে আছে, তেমনি স্কাইলার্কের গানও শ্রবণ না করলেও হৃদয়ে অনুভূত হয়।
শেলি প্রকৃত আনন্দ এবং সৌন্দর্যকে এমন একটি অভিজ্ঞতা হিসেবে চিত্রিত করেছেন, যা শুধুমাত্র বাহ্যিক ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে উপলব্ধি করা যায় না। এটি মনের গভীরতর স্তরে কাজ করে এবং আমাদের অস্তিত্বের সঙ্গে এক হয়ে যায়। স্কাইলার্কের গান এই দৃষ্টিতে চাঁদের মতোই, যা কখনো অদৃশ্য হলেও তার প্রভাব চিরকাল থেকে যায়। এই স্তবকে শেলি প্রকৃতির রহস্যময়তা ও তার অন্তর্নিহিত আনন্দের প্রতি তার গভীর আস্থা প্রকাশ করেছেন।
ষষ্ঠ স্তবক
All the earth and air
With thy voice is loud,
As, when night is bare,
From one lonely cloud
The moon rains out her beams, and Heaven is overflow’d.
ষষ্ঠ স্তবকে শেলি স্কাইলার্কের গানের শক্তি এবং প্রভাবকে বিস্তৃত মহাজাগতিক পরিসরে নিয়ে গেছেন। কবির মতে, স্কাইলার্কের সুর শুধু একটি নির্দিষ্ট স্থানে সীমাবদ্ধ নয়; এটি পৃথিবীর প্রতিটি কোণ এবং আকাশের প্রতিটি অংশকে ভরিয়ে তুলেছে। “All the earth and air / With thy voice is loud”—এর মাধ্যমে কবি বোঝাতে চেয়েছেন যে এই গান শুধুমাত্র শ্রবণযোগ্য সুরের চেয়ে অনেক বেশি কিছু। এটি যেন পৃথিবী ও আকাশকে এক অভিন্ন আনন্দময় সুরে ভরিয়ে দিচ্ছে।
কবি স্কাইলার্কের সুরকে চাঁদের আলোর সাথে তুলনা করেছেন, যা নির্জন মেঘ থেকে প্রবাহিত হয়ে আকাশে ছড়িয়ে পড়ে। “As, when night is bare, / From one lonely cloud / The moon rains out her beams”—এই চিত্রকল্পে চাঁদকে এমন একটি উৎস হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে, যা তার আলোকে অপ্রতিরোধ্যভাবে আকাশজুড়ে ছড়িয়ে দেয়।
শেলি এই দৃশ্যকে আরও গভীর তাৎপর্যে ভরপুর করেছেন। চাঁদের আলো যেমন মেঘ থেকে নির্গত হয়ে পুরো আকাশকে ভিজিয়ে দেয়, তেমনি স্কাইলার্কের গানও প্রকৃতির প্রতিটি অংশে ছড়িয়ে পড়ে এবং তার সুরে যেন পুরো আকাশ “Heaven is overflow’d”—অর্থাৎ পরিপূর্ণ হয়ে যায়।
এই স্তবকটি প্রকৃতির এমন এক শক্তিকে তুলে ধরে যা অদৃশ্য হলেও গভীর প্রভাব ফেলে। স্কাইলার্কের সুর এখানে শুধু শোনা যায় না, বরং এটি অনুভব করা যায় পৃথিবীর প্রতিটি পরতে। শেলির এই উপমার মাধ্যমে প্রকৃতির সঙ্গীত এবং তার আধ্যাত্মিক প্রভাবের প্রতি তার গভীর শ্রদ্ধা ফুটে উঠেছে। এই স্তবক প্রকৃত সৌন্দর্যকে এক সার্বজনীন অভিজ্ঞতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে, যা মানুষের মন ও প্রকৃতির মাঝে একাত্মতা তৈরি করে।
সপ্তম স্তবক
What thou art we know not;
What is most like thee?
From rainbow clouds there flow not
Drops so bright to see
As from thy presence showers a rain of melody.
সপ্তম স্তবকে শেলি আবারও স্কাইলার্কের অতিমানবিক ও আধ্যাত্মিক সত্তাকে তুলে ধরেছেন। কবি স্বীকার করছেন যে তিনি নিশ্চিত নন, স্কাইলার্ক আসলে কী। “What thou art we know not”—এর মাধ্যমে শেলি বোঝাতে চেয়েছেন যে এই পাখিটি শুধুমাত্র একটি জৈবিক সত্তা নয়, বরং এর অস্তিত্বের মধ্যে এমন কিছু লুকিয়ে আছে যা মানববোধের সীমা ছাড়িয়ে যায়।
কবির কাছে স্কাইলার্ক এমন কিছু যা প্রকৃতির চিরন্তন সৌন্দর্য এবং আনন্দের প্রতীক। তিনি প্রশ্ন করেন, “What is most like thee?”—এই পাখির তুলনায় প্রকৃতিতে অন্য কী হতে পারে? কবি এর উত্তরে বলেন যে এমনকি রংধনু মেঘ থেকে ঝরে পড়া বৃষ্টির ফোঁটার সৌন্দর্যও স্কাইলার্কের সুরের সৌন্দর্যের কাছে তুচ্ছ।
“From rainbow clouds there flow not / Drops so bright to see”—এই চিত্রকল্পে শেলি রংধনু মেঘের কথা বলেছেন, যা তার নিজস্ব সৌন্দর্যে মুগ্ধ করে। কিন্তু এরপরই তিনি সেটি বাতিল করেন, কারণ সেই মেঘ থেকে যে ফোঁটা ঝরে পড়ে তা স্কাইলার্কের গানের মাধুর্যের তুলনায় কম গুরুত্বপূর্ণ। স্কাইলার্কের উপস্থিতি থেকে যে “showers a rain of melody” বা সুরের বৃষ্টিধারা ঝরে পড়ে, তা রংধনুর মতো ক্ষণস্থায়ী নয় বরং আরও গভীরতর এবং স্থায়ী এক অভিজ্ঞতা।
শেলি এখানে বোঝাতে চেয়েছেন যে প্রকৃত আনন্দ এবং সৌন্দর্য কোনো বাহ্যিক বা চোখে দেখা বিষয় নয়। এটি আত্মার গভীরে প্রবাহিত হয় এবং অনুভূত হয় সৃষ্টিশীলতার মাধ্যমে। স্কাইলার্কের সুর, যা প্রকৃতির স্বতঃস্ফূর্ত আনন্দময়তা প্রকাশ করে, তা আমাদের দৈনন্দিন সৌন্দর্যের ধারণাকেও ছাড়িয়ে যায়। এই স্তবকটি প্রকৃতির অতিপ্রাকৃত শক্তি এবং তার সৃষ্টিশীলতার প্রতি কবির গভীর বিস্ময়কে চিহ্নিত করে।
অষ্টম স্তবক
Like a Poet hidden
In the light of thought,
Singing hymns unbidden,
Till the world is wrought
To sympathy with hopes and fears it heeded not:
অষ্টম স্তবকে শেলি স্কাইলার্কের সুরের গভীরতা এবং এর প্রভাবকে কাব্যিক চেতনার সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি স্কাইলার্ককে এমন এক কবির মতো দেখিয়েছেন, যে তার অন্তর্গত ভাবনার আলোয় লুকিয়ে থাকে—“Like a Poet hidden / In the light of thought।” এই লুকায়িত কবি এমন সব গান গেয়ে চলে যা অবাঞ্ছিত (unbidden) অর্থাৎ পূর্ব পরিকল্পিত নয়, বরং স্বতঃস্ফূর্ত এবং আত্মিকভাবে উদ্ভূত।
স্কাইলার্কের গান ঠিক যেমন একটি কবির অপ্রতিরোধ্য সৃষ্টিশীলতা প্রকাশ পায়, তেমনই স্বাভাবিকভাবে তার সুর প্রবাহিত হয়। এই গান মানুষের মন ও হৃদয়ে গভীর প্রভাব ফেলে এবং সেগুলোকে এমন এক স্তরে নিয়ে যায় যেখানে তারা অন্যদের আশা এবং ভয় সম্পর্কে সচেতন হয়ে ওঠে।
“Till the world is wrought / To sympathy with hopes and fears it heeded not”—এই লাইনগুলিতে শেলি বোঝাতে চেয়েছেন যে স্কাইলার্কের গান মানুষের মনের এক গভীর পরিবর্তন ঘটায়। যারা আগে অন্যদের দুঃখ, কষ্ট বা স্বপ্নের প্রতি উদাসীন ছিল, তারাও এই সুরের দ্বারা সংবেদনশীল হয়ে ওঠে। এই গান এক ধরনের নৈতিক উন্নতি ঘটায় এবং শ্রোতাদের অনুভূতিকে জাগিয়ে তোলে।
শেলির মতে, প্রকৃত কাব্যিক সৃষ্টিশীলতা এবং প্রকৃতির নিখুঁত সুর এমন এক শক্তি যা মানুষের মধ্যে সহানুভূতি এবং আবেগ জাগ্রত করতে সক্ষম। স্কাইলার্কের সুর যেন এমন একটি কাব্যিক শক্তি যা মানুষকে নিজের ভেতরে লুকিয়ে থাকা নৈতিকতাকে অনুভব করায় এবং তাদের সংযোগ স্থাপন করতে শেখায়। এই স্তবক প্রকৃতির অসীম শক্তি এবং শিল্পের মানবিক প্রভাবের এক অনন্য উদাহরণ।
নবম স্তবক
Like a high-born maiden
In a palace-tower,
Soothing her love-laden
Soul in secret hour
With music sweet as love, which overflows her bower:
নবম স্তবকে শেলি স্কাইলার্ককে “high-born maiden” অর্থাৎ এক রাজকুমারীর সঙ্গে তুলনা করেছেন, যিনি একটি প্রাসাদের উঁচু টাওয়ারে অবস্থান করছেন। এই টাওয়ারটি তার প্রিয়জন থেকে অনেক উপরে অবস্থিত, যেমন স্কাইলার্ক কবির দৃষ্টির বাইরে আকাশে উড়ছে। এই তুলনাটি শেলির প্রতীকী ভাবনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা প্রেম এবং সুরের গভীর সংযোগকে তুলে ধরে।
এই রাজকুমারী তার গোপন মুহূর্তে সঙ্গীতের মাধ্যমে তার “love-laden” বা প্রেমে পূর্ণ আত্মাকে সান্ত্বনা দেন। “Soothing her love-laden / Soul in secret hour”—এর মাধ্যমে কবি বোঝাচ্ছেন যে তার এই সুর শুধুমাত্র নিজের অনুভূতিগুলোকেই প্রশমিত করছে না, বরং এটি এমন এক গভীরতর আবেগে মিশে আছে যা তার চারপাশে ছড়িয়ে পড়ছে।
কুমারীর এই সুরকে শেলি স্কাইলার্কের গানের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তার সুর যেমন মধুর এবং প্রেমময়—“With music sweet as love,” তেমনি এই সুর তার ঘর বা “bower” (শয়নকক্ষ)-কে ভরিয়ে দেয়। “Overflows her bower” অর্থে বোঝানো হয়েছে যে এই সঙ্গীত শুধু একটি নির্দিষ্ট স্থানে সীমাবদ্ধ নয়; এটি প্রেমের আবেগে এতটাই পরিপূর্ণ যে তা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে।
শেলির দৃষ্টিতে স্কাইলার্কের গানও একইভাবে মুক্ত এবং বিস্তৃত। এটি কোনো নির্দিষ্ট স্থান বা প্রেক্ষাপটে আবদ্ধ নয় বরং মানুষের হৃদয়ে, আবেগে এবং প্রকৃতির প্রতিটি স্তরে প্রবাহিত হয়। স্কাইলার্কের এই সুর প্রেমের মতোই স্বতঃস্ফূর্ত, যা মানুষের আত্মাকে ছুঁয়ে যায় এবং তাদের অনুভূতিতে গভীর প্রভাব ফেলে। এই স্তবকে শেলি সঙ্গীত ও প্রেমের সেই সার্বিকতাকে তুলে ধরেছেন, যা মানুষের অভ্যন্তরীণ চেতনার গভীরে স্থায়ী হয়ে থাকে।
দশম স্তবক
Like a glow-worm golden
In a dell of dew,
Scattering unbeholden
Its aerial hue
Among the flowers and grass, which screen it from the view:
দশম স্তবকে শেলি স্কাইলার্কের সুরকে একটি জোনাকির আলো বা “glow-worm golden” এর সাথে তুলনা করেছেন, যা বনাঞ্চলের ছোট্ট উপত্যকা বা “dell” এর ভেজা ঘাস এবং ফুলের মাঝে জ্বলজ্বল করছে। এখানে “dell of dew” প্রকৃতির নরম, স্নিগ্ধ পরিবেশের চিত্র তুলে ধরে, যা এই আলোকে আরও মায়াময় ও কোমল করে তোলে।
জোনাকি পোকা যেমন আড়ালে থেকে তার স্বর্ণাভ আলো ছড়িয়ে দেয়, তেমনি স্কাইলার্কও তার সুরকে চারপাশে “Scattering unbeholden” অর্থাৎ অদৃশ্যভাবে ছড়িয়ে দিচ্ছে। “Unbeholden” বলতে বোঝানো হয়েছে যে এই সুর বা আলো কাউকে দেখানোর জন্য নয়; এটি স্বতঃস্ফূর্ত, নিজের অন্তর্নিহিত শক্তি থেকে উদ্ভূত। স্কাইলার্কের গান যেমন কারও নিয়ন্ত্রণে নয়, তেমনি জোনাকির আলোও প্রকৃতির নিজস্ব এক মাধুর্যে বিকশিত হয়।
কবির মতে, স্কাইলার্কের এই সুর আকাশ থেকে নিচে নেমে এসে ফুল ও ঘাসের মাঝে ছড়িয়ে পড়ছে—“Among the flowers and grass”—এবং সেই সুর সেখানে এমনভাবে মিশে যাচ্ছে যে তা চোখে দেখা যায় না, কিন্তু অনুভূত হয়। “Which screen it from the view” বলার মাধ্যমে শেলি বোঝাচ্ছেন যে প্রকৃত আনন্দ বা সৌন্দর্য অনেক সময় আমাদের চোখের আড়ালে থাকে, কিন্তু তার প্রভাব সর্বত্র বিরাজ করে।
এই তুলনা প্রকৃতির অভ্যন্তরীণ সৌন্দর্য এবং এর গভীর প্রভাবের প্রতি শেলির বিশ্বাসকে আরও দৃঢ় করে। স্কাইলার্কের গান এখানে মানবমনের অনুভূতিতে এমনভাবে ছাপ ফেলে যা সরাসরি দৃশ্যমান না হলেও অন্তর দিয়ে উপলব্ধি করা যায়। শেলির দৃষ্টিতে এই সুর প্রকৃতির মতোই অলক্ষ্য ও স্বাধীন, যা মানুষের আত্মার গভীরে মধুরতা ও আনন্দের সঞ্চার ঘটায়।
একাদশ স্তবক
Like a rose embower’d
In its own green leaves,
By warm winds deflower’d,
Till the scent it gives
Makes faint with too much sweet those heavy-winged thieves:
একাদশ স্তবকে শেলি স্কাইলার্কের সুরকে একটি গোলাপের সঙ্গে তুলনা করেছেন, যা নিজের সবুজ পাতা দ্বারা পরিবেষ্টিত—“rose embower’d / In its own green leaves।” এখানে গোলাপের এই চিত্র প্রকৃতির এক অনন্য রূপকে তুলে ধরে, যেখানে একটি সুন্দর কিছু নিজস্ব সুরক্ষা এবং পরিপূর্ণতায় বেড়ে ওঠে।
তবে এই সুরক্ষার অবসান ঘটে “warm winds” বা উষ্ণ বাতাসের দ্বারা, যা গোলাপের পাপড়িগুলোকে উড়িয়ে নিয়ে যায়—“deflower’d।” উষ্ণ বাতাস এই ফুলের সৌন্দর্যকে ছড়িয়ে দেয় এবং সেই পাপড়ি থেকে যে মিষ্টি ঘ্রাণ নির্গত হয় তা পুরো পরিবেশকে পূর্ণ করে।
“Till the scent it gives / Makes faint with too much sweet those heavy-winged thieves”—এই লাইনগুলিতে শেলি বোঝাচ্ছেন যে গোলাপের মিষ্টি ঘ্রাণ এতটাই তীব্র এবং আকর্ষণীয় যে বাতাসের মতো উড়ন্ত শক্তিও এই মাধুর্যে পরাভূত হয়ে যায়। “Heavy-winged thieves” বলতে এখানে এমন বাতাসকেই বোঝানো হয়েছে, যা ফুলের ঘ্রাণ চুরি করে পরিবেশে ছড়িয়ে দেয়, কিন্তু শেষপর্যন্ত সেই মাধুর্য তাদের নিজের জন্যই সহনীয় হয়ে ওঠে না।
স্কাইলার্কের সুরও ঠিক এমনটাই—যা একটি স্বাভাবিক গানের চেয়ে অনেক বেশি কিছু। এই সুর স্বতঃস্ফূর্তভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং চারপাশের সবাইকে মুগ্ধ ও বশীভূত করে। কবি এখানে বোঝাতে চেয়েছেন যে প্রকৃত সৌন্দর্য বা সঙ্গীত এমন একটি শক্তি যা শুধু বাহ্যিকভাবে উপভোগের বিষয় নয়; এটি এমন এক অন্তর্নিহিত শক্তি যা শ্রোতার হৃদয় ও আত্মাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে।
শেলির এই তুলনা প্রকৃতির স্বাধীন এবং অপার মাধুর্যকে বোঝায়, যা নিজের পথে চলতে চলতে চারপাশকে ভরিয়ে তোলে এবং যা কোনো কৃত্রিম নিয়ম বা কাঠামোর অধীন নয়। স্কাইলার্কের গানও এই গোলাপের মিষ্টি ঘ্রাণের মতোই, যা স্বাধীনভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং অনুভূতিতে অপরিসীম প্রভাব ফেলে।
দ্বাদশ স্তবক
Sound of vernal showers
On the twinkling grass,
Rain-awaken’d flowers,
All that ever was
Joyous, and clear, and fresh, thy music doth surpass.
দ্বাদশ স্তবকে শেলি স্কাইলার্কের সুরকে প্রকৃতির সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর ও আনন্দদায়ক দৃশ্যগুলোর চেয়েও অধিকতর মহিমান্বিত বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, বসন্তের বৃষ্টির শব্দ—“Sound of vernal showers”—যা ঘাসের উপর পড়ে এবং তাতে ঘাস ও ফুল ঝলমলিয়ে ওঠে, তার তুলনায় স্কাইলার্কের সুর আরও গভীর এবং শ্রেষ্ঠ।
“Twinkling grass” বলতে তিনি বৃষ্টির জলকণায় জ্বলজ্বল করা ঘাসকে বোঝাচ্ছেন। এই দৃশ্য বসন্তের একটি পরিচিত ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, যা সাধারণত খুবই আনন্দময় এবং সতেজ। একইভাবে “Rain-awaken’d flowers” বলতে তিনি বোঝাচ্ছেন বৃষ্টির স্পর্শে নতুনভাবে প্রাণ ফিরে পাওয়া ফুলগুলোর কথা।
কিন্তু কবির মতে, এই সবকিছুর চেয়েও স্কাইলার্কের সুর অনেক বেশি চমৎকার। “All that ever was / Joyous, and clear, and fresh, thy music doth surpass”—এই লাইনগুলিতে কবি বলছেন যে পৃথিবীর সবচেয়ে আনন্দময়, উজ্জ্বল এবং সতেজ অভিজ্ঞতাগুলোকেও এই পাখির সুর ছাড়িয়ে যায়। এটি এমন এক সুর যা প্রকৃতির সমস্ত সুষমা ও আনন্দকে অতিক্রম করে এক পরম সৃষ্টিশীলতার উচ্চতায় পৌঁছে যায়।
শেলির দৃষ্টিতে স্কাইলার্কের গান হলো এক চিরন্তন আনন্দের প্রতীক। এটি মানুষের মন এবং প্রকৃতির সবচেয়ে সুন্দর অনুভূতিগুলোর মধ্যে এক সেতুবন্ধ তৈরি করে। বসন্তের বৃষ্টির মতো প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সাময়িক, কিন্তু স্কাইলার্কের সুরের প্রভাব চিরন্তন এবং এর মাধ্যমে প্রকৃতির অন্তর্নিহিত আনন্দকে উপলব্ধি করা যায়।
ত্রয়োদশ স্তবক
Teach us, Sprite or Bird,
What sweet thoughts are thine:
I have never heard
Praise of love or wine
That panted forth a flood of rapture so divine.
ত্রয়োদশ স্তবকে শেলি একটি নতুন মোড় নিয়েছেন। এতদিন বিভিন্ন রূপক ও উপমার মাধ্যমে স্কাইলার্কের সুরকে ব্যাখ্যা করার পর, তিনি সরাসরি স্কাইলার্ককে সম্বোধন করে একটি প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি পাখিটিকে “Sprite or Bird” বলে ডেকেছেন। এখানে “Sprite” শব্দটি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি একটি অতিপ্রাকৃত আত্মার প্রতীক, যা মানব আবেগের চূড়ান্ত রূপকে ধারণ করে।
কবি জানতে চান, “What sweet thoughts are thine”—তোমার এই সুরের পিছনে কী এমন মধুর ভাবনা রয়েছে? শেলি একজন কবি হিসেবে স্কাইলার্কের শিল্পময় সৃষ্টিশীলতার রহস্য বুঝতে চান।
তিনি বলেন, তিনি কখনো এমন কোনো প্রশংসাসূচক সুর বা বক্তব্য শোনেননি, যা প্রেমের প্রশংসা বা মদের উচ্ছ্বাসের থেকেও বেশি আবেগঘন—“I have never heard / Praise of love or wine / That panted forth a flood of rapture so divine।” শেলি বোঝাতে চেয়েছেন, এমনকি মানবজাতির সবচেয়ে আকাঙ্ক্ষিত অনুভূতি—প্রেম বা আনন্দদায়ক নেশার মুহূর্ত—এসবও স্কাইলার্কের সুরের গভীরতা ও সৌন্দর্যের তুলনায় ম্লান।
স্কাইলার্কের সুরকে তিনি “a flood of rapture so divine” বলে বর্ণনা করেছেন, যার মাধ্যমে বুঝতে পারা যায় যে এই সুরের প্রভাব ঐশ্বরিক এবং মানবজগতে বিরল। এটি শুধুমাত্র একটি সাধারণ গান নয়; বরং এটি এমন এক স্রোত যা আত্মাকে গভীরভাবে স্পর্শ করে এবং হৃদয়ে এক অনন্য অভিজ্ঞতার জন্ম দেয়।
এই স্তবকটি মানবসৃষ্ট আনন্দ এবং প্রকৃতির সৃষ্টিশীলতার মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরে। শেলি এই সুরকে এমন কিছু হিসেবে দেখছেন যা মানুষের সাধারণ অনুভূতিকে ছাড়িয়ে যায় এবং তাকে এমন এক পর্যায়ে নিয়ে যায়, যেখানে শুধু অনুভবের মাধ্যমেই সেই সৌন্দর্য উপলব্ধি করা সম্ভব।
চতুর্দশ স্তবক
Chorus Hymeneal,
Or triumphal chant,
Match’d with thine would be all
But an empty vaunt,
A thing wherein we feel there is some hidden want.
চতুর্দশ স্তবকে শেলি স্কাইলার্কের সুরকে মানুষের বিভিন্ন মহান অনুষ্ঠানের গানের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি বলেছেন, এটি “Chorus Hymeneal” বা বিয়ের সময় গাওয়া সংগীত এবং “triumphal chant” বা বিজয়ের সময় গাওয়া উচ্ছ্বাসপূর্ণ গান—দুটির চেয়েই গভীরতর এবং মহিমান্বিত। স্কাইলার্কের গান মানবজীবনের সব পরিস্থিতিতে উপযোগী এবং এর প্রভাব সব ধরনের আবেগময় বা উদযাপনমূলক সঙ্গীতকে ছাড়িয়ে যায়।
কবির মতে, এমনকি সবচেয়ে পবিত্র বা বিজয়ের মুহূর্তে গাওয়া সঙ্গীতও যদি স্কাইলার্কের গানের সঙ্গে তুলনা করা হয়, তবে তা হবে “an empty vaunt” বা একটি অর্থহীন গর্বের প্রদর্শন। এই গানগুলোর মধ্যে এমন কিছু নেই যা স্কাইলার্কের সুরের মতো হৃদয়কে গভীরভাবে স্পর্শ করতে পারে।
“Match’d with thine would be all / But an empty vaunt”—এর মাধ্যমে শেলি বোঝাচ্ছেন, মানুষের সৃষ্ট যেকোনো গান যখন প্রকৃতির এই চিরন্তন সুরের পাশে দাঁড়ায়, তখন তা অপর্যাপ্ত এবং ম্লান মনে হয়। এমনকি এই গানগুলোর মধ্যেও একটি “hidden want” বা অন্তর্নিহিত অভাব থাকে, যা আমরা অনুভব করতে পারি, যদিও তা সরাসরি প্রকাশ করা যায় না।
স্কাইলার্কের সুরের এই অতুলনীয়তা বোঝাতে শেলি এই স্তবকটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণভাবে ব্যবহার করেছেন। এখানে তিনি বুঝিয়েছেন যে প্রকৃতির সঙ্গীত কোনো বাহ্যিক গর্ব বা কৃত্রিমতার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি এমন এক নিখুঁত এবং গভীর সৃষ্টিশীলতার প্রতীক, যা মানুষের সৃষ্ট সঙ্গীতকে ছাড়িয়ে যায় কারণ এটি সরাসরি প্রকৃতির অন্তর্নিহিত সৌন্দর্য থেকে উৎসারিত। স্কাইলার্কের গান যেন এমন এক চিরন্তন সত্য, যা মানবজীবনের সবচেয়ে উচ্চমার্গীয় অনুভূতিতেও অনুপস্থিত থেকে যায়।
পঞ্চদশ স্তবক
What objects are the fountains
Of thy happy strain?
What fields, or waves, or mountains?
What shapes of sky or plain?
What love of thine own kind? what ignorance of pain?
পঞ্চদশ স্তবকে শেলি আবারও স্কাইলার্কের মনস্তত্ত্বে প্রবেশ করার চেষ্টা করছেন। তিনি জানতে চান—এই অসীম আনন্দময় সুরের উৎস আসলে কী? “What objects are the fountains / Of thy happy strain?”—কোনো নির্দিষ্ট জিনিস কি এই আনন্দময় সঙ্গীতের জন্য অনুপ্রেরণা জোগায়?
কবি কয়েকটি সম্ভাবনা তুলে ধরেন। তিনি প্রশ্ন করেন—“What fields, or waves, or mountains?”—এই গান কি সবুজ মাঠ, ঢেউয়ের খেলা, অথবা পাহাড়ের দৃশ্য থেকে অনুপ্রাণিত? নাকি এটি আকাশের রূপ বা বিস্তৃত প্রান্তরের সৌন্দর্য দ্বারা প্রভাবিত—“What shapes of sky or plain?”
এরপর কবি আরও গভীরভাবে প্রশ্ন তোলেন—“What love of thine own kind?”—তুমি কি তোমার নিজের প্রজাতির প্রতি ভালোবাসা থেকে এই সুর পেয়েছো? এটি কি সেই ভালোবাসা যা তুমি তোমার সঙ্গী বা প্রিয়জনের মধ্যে অনুভব করো? অথবা, এই সুর কি আসে সেই জীবন থেকে যা দুঃখ-কষ্ট থেকে মুক্ত—“what ignorance of pain?”
এই প্রশ্নগুলোর মাধ্যমে শেলি এমন এক প্রশ্নবোধক পরিস্থিতি তৈরি করেছেন যা শুধুমাত্র স্কাইলার্ককে নয়, বরং মানবজীবনের গভীরতম এক প্রশ্নের দিকে নির্দেশ করে—আনন্দ ও সুখের প্রকৃত উৎস কী? কবি বিশ্বাস করেন যে যদি তিনি স্কাইলার্কের এই রহস্যময় সুরের উৎস খুঁজে বের করতে পারেন, তবে তিনি জীবন ও প্রকৃতির চূড়ান্ত আনন্দের রহস্য বুঝতে পারবেন।
কিন্তু এই স্তবকটি শুধু প্রশ্নের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; এটি প্রকৃতির অসীমতা এবং মানুষের সীমাবদ্ধতাকে তুলে ধরে। স্কাইলার্কের গান এমন একটি আধ্যাত্মিক এবং নিরবচ্ছিন্ন আনন্দের প্রতীক, যা হয়তো কখনো সম্পূর্ণভাবে বোঝা সম্ভব নয়। তবে শেলির মতে, এই সুর আমাদের বারবার সেই চিরন্তন প্রশ্নের মুখোমুখি করে—কীভাবে আমরা প্রকৃত সুখ এবং শুদ্ধ আনন্দ খুঁজে পাবো?
ষোড়শ স্তবক
With thy clear keen joyance
Languor cannot be:
Shadow of annoyance
Never came near thee:
Thou lovest: but ne’er knew love’s sad satiety.
ষোড়শ স্তবকে শেলি স্কাইলার্কের অসীম আনন্দময়তার প্রকৃতিকে আরও গভীরভাবে বিশ্লেষণ করেছেন। তিনি বলেন, স্কাইলার্কের যে “clear keen joyance” অর্থাৎ নির্মল এবং তীক্ষ্ণ আনন্দময়তা, তাতে কখনো “Languor” বা অবসাদ বাসা বাঁধতে পারে না। এই পাখির সুর এবং জীবনের সঙ্গে ক্লান্তি বা দুঃখের কোনো সম্পর্ক নেই।
“Shadow of annoyance / Never came near thee”—এই পঙক্তিতে শেলি বুঝিয়েছেন যে স্কাইলার্কের জীবনে বিরক্তি বা কোনো ধরণের মানসিক যন্ত্রণা কখনো প্রবেশ করেনি। এটি এমন এক পরম আনন্দে অবস্থান করছে, যেখানে পৃথিবীর সাধারণ কষ্ট এবং বিরক্তির প্রভাব পড়ে না।
কবি আরও বলেন, স্কাইলার্ক ভালোবাসে—“Thou lovest,” কিন্তু সেই ভালোবাসার সঙ্গে মানুষের মতো দুঃখ বা বেদনার অভিজ্ঞতা নেই। “Ne’er knew love’s sad satiety” দ্বারা বোঝানো হয়েছে যে স্কাইলার্ক ভালোবাসার মিষ্টতা উপভোগ করেছে, কিন্তু কখনো সেই ভালোবাসার প্রতি অতৃপ্তি বা বেদনাময় পরিণতি অনুভব করেনি। মানুষের জীবনে ভালোবাসা অনেক সময় দুঃখ এবং অতৃপ্তি নিয়ে আসে, যা স্কাইলার্কের জন্য অজানা।
এই স্তবকটি স্কাইলার্কের জীবনের পরিপূর্ণতা এবং মুক্তিকে তুলে ধরেছে। এটি প্রকৃতির এমন একটি চিত্র তুলে ধরে, যা দুঃখ-কষ্ট এবং মানবিক সীমাবদ্ধতা থেকে মুক্ত। শেলির দৃষ্টিতে স্কাইলার্ক এমন এক সত্তা যা কেবলমাত্র প্রকৃতির সঙ্গে মিলেমিশে চিরন্তন আনন্দ উপভোগ করে। এর সুর তাই মানুষকে শেখায় কিভাবে বিশুদ্ধ ভালোবাসা এবং নির্মল আনন্দ খুঁজে পাওয়া যায়, যেখানে কোনো ক্লান্তি বা বেদনাবোধ স্থান পায় না।
সপ্তদশ স্তবক
Waking or asleep,
Thou of death must deem
Things more true and deep
Than we mortals dream,
Or how could thy notes flow in such a crystal stream?
সপ্তদশ স্তবকে শেলি স্কাইলার্কের সুরের গভীরতায় আধ্যাত্মিক এবং অস্তিত্বগত চিন্তার বিষয়টি তুলে ধরেছেন। তিনি বিশ্বাস করেন যে এই পাখি এমন কিছু সত্য এবং গভীর উপলব্ধির অধিকারী, যা সাধারণ মানুষ বা “we mortals” স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারে না।
“Waking or asleep”—জাগ্রত অবস্থায় হোক বা ঘুমের সময়, স্কাইলার্ক মৃত্যুর ব্যাপারে এমন কিছু উপলব্ধি লাভ করেছে যা আমাদের চেনা বাস্তবতাকে ছাড়িয়ে যায়। “Thou of death must deem / Things more true and deep”—এর মাধ্যমে কবি বোঝাচ্ছেন, মৃত্যুকে ঘিরে এই পাখির জ্ঞান বা অভিজ্ঞতা এমন কিছু, যা মানবজীবনের সীমাবদ্ধ জ্ঞানকে অতিক্রম করে গেছে।
স্কাইলার্কের সুর এতটাই নির্মল এবং নির্ভুল যে এটি কোনো সাধারণ অভিজ্ঞতা থেকে আসতে পারে না। কবি প্রশ্ন করেন—“Or how could thy notes flow in such a crystal stream?”—তোমার এই সুর যদি সাধারণ অভিজ্ঞতার ফল হতো, তবে তা এতটা স্বচ্ছ এবং নির্মল হতো না। এটি এমন এক সুর, যা জীবনের গভীরতম সত্য ও মৃত্যুর রহস্যময়তাকে ধারণ করে।
শেলির মতে, এই সুরের উৎস পৃথিবীর বাইরে, হয়তো এমন কোনো আধ্যাত্মিক স্থান থেকে যেখানে জীবনের চূড়ান্ত সত্য উপলব্ধ হয়। স্কাইলার্কের গান কেবল প্রাকৃতিক নয়, বরং আধ্যাত্মিকতার প্রতিফলন, যা মানুষের সীমিত অনুভূতি ও জ্ঞানের বাইরে গিয়ে গভীর অর্থ বহন করে।
এই স্তবকে শেলি প্রকৃতির এক গভীর দার্শনিক উপলব্ধিকে তুলে ধরেছেন। স্কাইলার্কের সুরকে এমন এক মাধ্যম হিসেবে দেখানো হয়েছে যা প্রকৃতির সাধারণ সৌন্দর্যকে ছাড়িয়ে জীবনের চরম সত্য এবং মৃত্যুর রহস্যকে ছুঁয়ে যায়। এর সুর মানুষকে শেখায়, জীবন ও মৃত্যুর মধ্যে লুকিয়ে থাকা অতলান্তিক সত্যকে অনুভব করতে হলে শুধুমাত্র অভিজ্ঞতার চেয়ে বেশি কিছু দরকার—প্রকৃত আত্মিক উপলব্ধি।
অষ্টাদশ স্তবক
We look before and after,
And pine for what is not:
Our sincerest laughter
With some pain is fraught;
Our sweetest songs are those that tell of saddest thought.
অষ্টাদশ স্তবকে শেলি মানুষের এবং স্কাইলার্কের জীবনবোধের মধ্যে গভীর তফাৎ তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, মানুষ সবসময় জীবনের অতীত এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত থাকে—“We look before and after।” এই চিন্তা আমাদের বর্তমান মুহূর্তের আনন্দ উপভোগ করতে দেয় না। আমরা সর্বদা “pine for what is not,” অর্থাৎ যা আমাদের কাছে নেই, সেই অনুপস্থিত জিনিসের জন্য আকুল হই।
মানুষের সবচেয়ে আন্তরিক হাসিতেও থাকে দুঃখের মিশ্রণ—“Our sincerest laughter / With some pain is fraught।” শেলির দৃষ্টিতে মানবজীবনের প্রতিটি আনন্দময় মুহূর্তের পেছনে লুকিয়ে থাকে কোনো না কোনো দুঃখ বা ব্যর্থতার স্মৃতি।
এমনকি আমাদের “sweetest songs,” অর্থাৎ সবচেয়ে প্রিয় এবং আবেগঘন গানগুলোও দুঃখের অনুভূতিকে কেন্দ্র করেই রচিত। “Our sweetest songs are those that tell of saddest thought”—এই লাইনটি মানবজাতির মনের গভীর সত্যকে তুলে ধরে। এটি বোঝায় যে আমাদের সবচেয়ে প্রিয় সঙ্গীতগুলোর মধ্যে এমন এক আবেগ থাকে, যা দুঃখ-কষ্টের অভিজ্ঞতা থেকে আসে।
শেলির মতে, স্কাইলার্কের সুর এর ঠিক বিপরীত। এই পাখির গান দুঃখ বা কষ্ট থেকে নয়; বরং এটি সম্পূর্ণ মুক্ত, আনন্দে ভরপুর এবং জীবনের প্রতি গভীর সন্তুষ্টির প্রতীক। মানুষের গান যেখানে দুঃখের মিশ্রণে আবেগপ্রবণ, স্কাইলার্কের গান সেখানে নিখুঁত আনন্দের এক অমলিন প্রতিচ্ছবি।
এই স্তবকটি মানুষের অস্তিত্বের সীমাবদ্ধতা এবং আত্মিক যন্ত্রণাকে তুলে ধরে। শেলি বোঝাতে চেয়েছেন যে আমাদের মানবিক দুর্বলতা এবং অতীতের আঘাত আমাদের জীবনকে পূর্ণাঙ্গভাবে উপভোগ করতে বাধা দেয়। স্কাইলার্কের মতো নির্মল এবং পূর্ণাঙ্গ আনন্দে পৌঁছানো মানুষের পক্ষে কঠিন কারণ আমরা সবসময় আমাদের স্মৃতির কষ্ট বা ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তায় আটকে থাকি। কিন্তু স্কাইলার্কের গান আমাদের সেই চিরন্তন মুক্তির এবং নিখুঁত আনন্দের দিকে ইঙ্গিত করে, যা আমরা কেবল কল্পনা করতে পারি।
উনবিংশ স্তবক
Yet if we could scorn
Hate, and pride, and fear;
If we were things born
Not to shed a tear,
I know not how thy joy we ever should come near.
উনবিংশ স্তবকে শেলি মানবজাতির সীমাবদ্ধতা এবং স্কাইলার্কের চিরন্তন আনন্দের মধ্যে আরও গভীর পার্থক্য তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, যদি আমরা “Hate, and pride, and fear”—অর্থাৎ ঘৃণা, অহংকার এবং ভয়কে তুচ্ছ করতে পারতাম এবং এসব অনুভূতির ঊর্ধ্বে উঠতে পারতাম, তবুও স্কাইলার্কের আনন্দকে পুরোপুরি বুঝতে বা তার কাছাকাছি যেতে পারতাম না।
কবি আরও বলেন, যদি আমরা এমন সত্তা হয়ে জন্মাতাম, যারা কখনো “tear” বা অশ্রু ফেলতে বাধ্য হতো না—“If we were things born / Not to shed a tear”—তাহলেও স্কাইলার্কের মতো আনন্দময় হতে পারতাম না। এখানে শেলি বোঝাতে চেয়েছেন যে মানবজীবনে দুঃখ-কষ্ট এবং আবেগের যে গভীর প্রভাব রয়েছে, তা আমাদের প্রকৃত আনন্দের কাছাকাছি যেতে দেয় না।
“I know not how thy joy we ever should come near”—এই লাইনটি কবির চূড়ান্ত উপলব্ধির প্রতিফলন। তিনি মনে করেন, এমনকি যদি মানুষ তার সমস্ত নেতিবাচকতা এবং আবেগকে দূর করেও এক নির্ভুল অবস্থায় পৌঁছায়, তবুও স্কাইলার্কের আনন্দের গভীরতা এবং বিশুদ্ধতাকে পুরোপুরি অনুভব করা অসম্ভব। স্কাইলার্কের আনন্দ মানবসত্তার সীমাবদ্ধতার বাইরে এক চিরন্তন ও অতীন্দ্রিয় অভিজ্ঞতা।
এই স্তবকটি প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের অন্তর্নিহিত বিরোধকে তুলে ধরে। শেলির মতে, প্রকৃতির আনন্দ সহজাত, স্বতঃস্ফূর্ত এবং দুঃখের দ্বারা কলুষিত নয়, কিন্তু মানুষের আনন্দ সর্বদাই কিছু না কিছু কষ্ট বা অভিজ্ঞতার মাধ্যমে গঠিত। স্কাইলার্কের মতো নিখুঁত আনন্দ মানুষ অর্জন করতে পারে না, কারণ আমরা এমন একটি জীবনযাত্রার অংশ যা ঘৃণা, ভয় এবং দুঃখ-কষ্টের ছায়ায় আচ্ছন্ন।
বিংশতম স্তবক
Better than all measures
Of delightful sound,
Better than all treasures
That in books are found,
Thy skill to poet were, thou scorner of the ground!
বিংশতম স্তবকে শেলি তার শেষ আবেদনটি করেছেন স্কাইলার্কের প্রতি। তিনি কবি হিসেবে স্বীকার করেছেন যে স্কাইলার্কের গানের সৃষ্টিশীলতা এবং আনন্দের ক্ষমতা এমন কিছু, যা পৃথিবীর অন্য কোনো জিনিসের সঙ্গে তুলনীয় নয়।
“Better than all measures / Of delightful sound”—কবির মতে, পৃথিবীর সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর এবং উপভোগ্য সুরের চেয়েও স্কাইলার্কের গান অনেক বেশি মূল্যবান। এমনকি সংগীতের সর্বোচ্চ মাত্রাকেও এটি ছাড়িয়ে যায়।
এখানে শেলি আরও বলেন যে “Better than all treasures / That in books are found”—স্কাইলার্কের সঙ্গীত এবং তার আনন্দময়তা সেই সমস্ত মূল্যবান জ্ঞানের চেয়েও বেশি, যা আমরা বইয়ে খুঁজে পাই। কবির মতে, বইয়ের মধ্যেকার বিদ্যা এবং জ্ঞান, যা পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় মানুষ অর্জন করেছে, তা কখনোই স্কাইলার্কের স্বতঃস্ফূর্ত ও নির্মল সুরের মতো গভীর হতে পারে না।
তিনি স্কাইলার্ককে “thou scorner of the ground” বলে সম্বোধন করেছেন, যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এটি বোঝায় যে স্কাইলার্ক সবসময় মাটির সংস্পর্শ এড়িয়ে আকাশে মুক্তভাবে উড়ে বেড়ায় এবং সেই স্বাধীনতার মধ্যেই সে তার আনন্দ খুঁজে পায়। এটি এমন এক প্রতীক, যা জীবনের সাধারণতার ঊর্ধ্বে উঠে আত্মিক মুক্তি এবং নির্মল আনন্দকে প্রকাশ করে।
এই স্তবকের মাধ্যমে শেলি বুঝিয়ে দিয়েছেন যে স্কাইলার্কের মতো প্রকৃতির সুর এবং তার অন্তর্নিহিত আনন্দ কবিদের জন্য সবচেয়ে বড় শিক্ষা। পৃথিবীর কোনো ধন-সম্পদ বা জ্ঞান এই সৃষ্টিশীলতার সঙ্গে তুলনীয় নয়। স্কাইলার্ক যেন সেই আধ্যাত্মিক অনুপ্রেরণার প্রতীক, যা মানবজীবনের দুঃখ-কষ্ট পেরিয়ে প্রকৃত আনন্দে পৌঁছানোর উপায় দেখায়।
একবিংশ স্তবক
Teach me half the gladness
That thy brain must know,
Such harmonious madness
From my lips would flow
The world should listen then, as I am listening now.
একবিংশ স্তবকে শেলি তার চূড়ান্ত এবং গভীর আকাঙ্ক্ষার প্রকাশ ঘটিয়েছেন। তিনি স্কাইলার্কের কাছে অনুরোধ করছেন—“Teach me half the gladness / That thy brain must know”—তুমি যে আনন্দ অনুভব করো, তার অর্ধেকটা হলেও আমাকে শেখাও। এখানে “gladness” শব্দটি শুধু সাধারণ সুখের ইঙ্গিত দেয় না, বরং স্কাইলার্কের অভিজ্ঞতায় নিহিত নির্মল ও গভীর আনন্দের প্রতীক।
কবি বিশ্বাস করেন, যদি তিনি স্কাইলার্কের আনন্দের সামান্য অংশও বুঝতে পারেন, তবে তার “lips” থেকে এক ধরনের “harmonious madness” বা সংগীতময় উন্মাদনা প্রবাহিত হবে। এই উন্মাদনা কোনো বিশৃঙ্খলা নয়, বরং এটি এমন এক সুর যা আত্মার গভীরতম অনুভূতিকে প্রকাশ করবে।
“Such harmonious madness / From my lips would flow”—কবির মতে, এই সুর এমনই শক্তিশালী হবে যে এটি গোটা বিশ্বের মনোযোগ আকর্ষণ করবে। “The world should listen then, as I am listening now”—যেভাবে তিনি এখন স্কাইলার্কের গান শুনে মুগ্ধ হয়ে আছেন, সেভাবে তার সৃষ্টিশীল সুরেও পৃথিবী মুগ্ধ হবে এবং মনোযোগ দেবে।
এই স্তবকটি কবিতার মূল থিমের পরিপূর্ণ সমাপ্তি টেনেছে—একজন মানুষের চিরন্তন সুখের সন্ধান। শেলি এখানে কেবলমাত্র স্কাইলার্কের সুরের প্রতি মুগ্ধ হননি, বরং তার মাধ্যমে জীবনের অন্তর্নিহিত অর্থ এবং সত্যিকারের আনন্দের রহস্য খুঁজে পেতে চান।
English Summary
“To a Skylark” is a lyrical ode that praises the skylark as a symbol of unrestrained joy, creativity, and spiritual liberation. Through this poem, Percy Bysshe Shelley explores the purity of the skylark’s happiness and compares it to the limitations and sorrows that define human existence. The poet contrasts the skylark’s ability to experience unfiltered joy with the human tendency to be weighed down by pain, regret, and longing.
The poem begins with the speaker observing a skylark flying high in the sky. The bird’s song is spontaneous and natural, described as “unpremeditated” and “profuse strains of unpremeditated art.” As the bird flies higher, disappearing into the clouds, its melodious song continues to resonate, symbolizing its presence even when it is no longer visible. The skylark, for Shelley, becomes a metaphor for the idealized, spiritual state of happiness that he seeks but cannot reach.
Shelley then embarks on an extended exploration of metaphors and similes to describe the skylark’s song and nature. He compares it to a “high-born maiden” singing to her lover, spring showers that bring life to flowers, a glow-worm shining in a dewy valley, and a rose that spreads its fragrance in the wind. The skylark is also likened to “rainbow clouds” and other natural phenomena that symbolize beauty, purity, and joy. Through these metaphors, Shelley emphasizes that the skylark embodies the essence of all that is joyful and transcendent.
In the later sections of the poem, Shelley questions the source of the skylark’s unbridled joy. He asks whether it is inspired by the beauty of nature, such as fields, waves, or mountains, or by the love of its own kind. Despite his inquiries, the poet concludes that the skylark’s joy transcends human comprehension. It must be free from the sorrows and burdens that plague human life. Shelley believes that the skylark, unlike humans, is not touched by pain, regret, or the fear of death. Its joy comes from an elevated understanding of life and existence beyond human limitations.
The poet contrasts the skylark’s pure happiness with the human condition. Humans, he states, “look before and after” and are constantly longing for things they do not have. Even in moments of joy, humans are haunted by sadness, and their sweetest songs are often born out of pain and melancholy. Shelley laments that humans cannot experience the same level of pure, untainted joy that the skylark possesses.
The poem concludes with Shelley’s plea to the skylark to share its wisdom. He begs the bird to “teach me half the gladness / That thy brain must know.” Shelley believes that even a small portion of the skylark’s happiness would allow him to create a “harmonious madness” through his poetry, which would captivate the world just as the skylark’s song captivates him.
Ultimately, “To a Skylark” is a meditation on the contrast between human limitations and the limitless joy found in nature. Shelley uses the skylark as a symbol of unattainable bliss, portraying it as an ideal to which humans aspire but can never fully achieve. Through its exploration of joy, art, and spirituality, the poem resonates as a deeply introspective and philosophical reflection on the nature of happiness and creative inspiration.