Table of Contents
Long Walk to Freedom by Nelson Mandela
নেলসন ম্যান্ডেলার আত্মজীবনী “Long Walk to Freedom” তাঁর জীবনের দীর্ঘ সংগ্রাম এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ইতিহাস তুলে ধরেছে। বইটি ম্যান্ডেলার শৈশব, রাজনৈতিক জীবনের উত্থান, কারাবাস এবং প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর অভিজ্ঞতার বর্ণনা দেয়। ম্যান্ডেলার জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ই বর্ণবাদী শাসনের বিরুদ্ধে তাঁর আপোষহীন লড়াই এবং গণতন্ত্র ও সমতার জন্য তাঁর দৃঢ় প্রতিজ্ঞার সাক্ষ্য বহন করে। এই বইটি শুধুমাত্র ম্যান্ডেলার ব্যক্তিগত যাত্রা নয়, বরং একটি জাতির স্বাধীনতা অর্জনের জন্য সংগ্রামের কাহিনী, যা পুরো বিশ্বকে ন্যায়বিচার ও মানবাধিকারের জন্য লড়াইয়ে অনুপ্রাণিত করেছে।
বিষয় (Subject) | তথ্য (Information) |
---|---|
শিরোনাম (Title) | “Long Walk to Freedom” |
লেখক (Author) | Nelson Mandela (১৯১৮-২০১৩) |
লেখার সময়কাল (Written Date) | The book was written during Mandela’s imprisonment between 1974 and 1990, at first on Robben Island, and continued after his release, completing it in 1994. |
প্রকাশের তারিখ (Published Date) | ১৯৯৪ |
ধরন (Genre) | Autobiography, Political Memoir |
স্বর (Tone) | Reflective, Inspirational, Determined |
Bangla Translation
১০ই মে উজ্জ্বল এবং পরিষ্কার ভোর হলো। গত কয়েকদিন ধরে আমি নানা দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও বিশ্ব নেতাদের উপস্থিতিতে ছিলাম, যারা আমার অভিষেকের আগে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন। এই অনুষ্ঠানটি হবে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক নেতৃবৃন্দের সমাবেশ। প্রিটোরিয়ার মনোরম ইউনিয়ন বিল্ডিং-এর বেলেপাথরের মুক্তাঙ্গনে এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়। এই স্থানটি ছিল একসময় শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যের প্রতীক, আর আজ এটি সাক্ষী হলো দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম গণতান্ত্রিক ও জাতিভেদহীন সরকারের অভিষেকের।
সেদিন আমার সঙ্গে ছিল আমার কন্যা, জেনানী। মঞ্চে প্রথমে মি. ডি ক্লার্ক দ্বিতীয় উপ-রাষ্ট্রপতির শপথ গ্রহণ করেন। এরপর থাবো ম্বেকি প্রথম উপ-রাষ্ট্রপতির শপথ গ্রহণ করেন। যখন আমার পালা এলো, আমি সংবিধান রক্ষা ও সমুন্নত রাখার এবং প্রজাতন্ত্র ও তার জনগণের কল্যাণে নিজেকে নিবেদিত করার শপথ নিলাম। সমবেত অতিথি ও বিশ্ববাসীর উদ্দেশে আমি বললাম, “আজ আমরা সবাই এখানে উপস্থিত হয়ে নবজাত স্বাধীনতাকে সম্মান জানাচ্ছি। দীর্ঘকাল ধরে চলা মানব বিপর্যয়ের অভিজ্ঞতা থেকে একটি সমাজ গড়ে উঠেছে, যা সারা বিশ্বের কাছে গৌরবের বিষয় হবে। আমরা, যারা একসময় ছিলেন সমাজচ্যুত, আজ তাদেরই বিরল সম্মান দেওয়া হয়েছে আমাদের এই মাটিতে সারা বিশ্বের নেতাদের স্বাগত জানাতে। এটি শুধু দক্ষিণ আফ্রিকার নয়, বিশ্ব মানবতার জন্য একটি বিজয়।”
এরপর আমি আরও বললাম, “আমরা আমাদের রাজনৈতিক মুক্তি অর্জন করেছি। আমরা সবাই প্রতিজ্ঞা করছি যে আমাদের সকল জনগণকে দারিদ্র্য, বঞ্চনা, কষ্ট, এবং লিঙ্গ বৈষম্যসহ অন্যান্য অন্যায় থেকে মুক্ত করব।”
এরপর সামরিক বাহিনীর বিমান, হেলিকপ্টার ও ট্রুপ ক্যারিয়ারগুলি আকাশে শোভা প্রদর্শন করল। এটি কেবলমাত্র সামরিক ক্ষমতার প্রদর্শনী ছিল না, বরং স্বাধীনতার প্রতি তাদের আনুগত্যের প্রতীক ছিল। কয়েক বছর আগে তারা আমাকে সম্মান না জানিয়ে গ্রেফতার করত। এখন তারা আমাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে তাদের আনুগত্য প্রকাশ করল। পরে যখন নতুন দক্ষিণ আফ্রিকার পতাকার রঙের ধোঁয়া আকাশে ছড়িয়ে পড়ল, তখন আমার কাছে এদিনের প্রতীক হয়ে দাঁড়ালো আমাদের দুই জাতীয় সংগীতের সংগীতায়োজন। শ্বেতাঙ্গরা “Nkosi Sikelel’ iAfrika” এবং কৃষ্ণাঙ্গরা “Die Stem” গাইল। দু’দলেরই তখন গানটির কথা জানা ছিল না, কিন্তু ভবিষ্যতে তারা অবশ্যই তা হৃদয়ঙ্গম করবে।
অভিষেকের দিন আমার মনে ইতিহাসের গভীর অনুভূতি কাজ করছিল। বিশ শতকের প্রথম দশকে, দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গরা একটি জাতিগত শ্রেষ্ঠত্বের সমাজ গঠন করে। সেই ব্যবস্থা ছিল পৃথিবীর অন্যতম নিষ্ঠুর ব্যবস্থা। এখন, আমার জীবনের অষ্টম দশকে, সেই ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেল এবং একটি নতুন ব্যবস্থা স্থাপিত হলো যা সকল মানুষের অধিকার ও স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেয়।
এই দিনটি আমার কাছে সম্ভব হয়েছিল অসংখ্য মানুষের ত্যাগের ফলে, যারা দীর্ঘকাল ধরে সংগ্রাম করেছে। আমি অনুভব করছিলাম যে আমি তাদের ঐতিহ্যের ধারক এবং বাহক। তাদের এই অবিস্মরণীয় আত্মত্যাগের প্রতিদান হয়তো কখনো দেওয়া সম্ভব নয়।
দক্ষিণ আফ্রিকার উপর জাতিগত বৈষম্যের প্রভাব ছিল গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী। আমাদের সকলেরই এই ক্ষত থেকে সেরে উঠতে অনেক সময় লাগবে। কিন্তু এটি আমাদের সামনে তুলে ধরল যে, কেবল দুঃখ-কষ্টের মাঝেই অনন্য মানুষদের সৃষ্টি হয়, যেমন অলিভার টাম্বো, ওয়াল্টার সিসুলু, চিফ লুথুলি প্রমুখ।
এই সংগ্রামে আমি শিখেছি সাহসের প্রকৃত অর্থ কী। সাহস মানে ভয়ের অনুপস্থিতি নয়, বরং তার উপর বিজয়। বহুবার আমি নিজেও ভয় পেয়েছি, কিন্তু তা ঢেকে রেখেছি দৃঢ়তার আড়ালে। সাহসী সেই ব্যক্তি নয়, যে ভয় পায় না, বরং সেই, যে তার ভয়কে পরাজিত করতে পারে।
আমাদের সংগ্রাম কখনোই সহজ ছিল না, কিন্তু আমি কখনোই আশা হারাইনি। কারণ আমি বিশ্বাস করতাম মানুষের হৃদয়ে করুণার জায়গা আছে। মানুষকে ঘৃণা করতে শেখানো যায়, তেমনই ভালবাসাও শেখানো যায়, কারণ ভালবাসা মানুষের হৃদয়ে স্বাভাবিকভাবেই আসে।
আমরা সেই লড়াই শুরু করেছিলাম আমাদের চোখ খোলা রেখে, পথের বাধাগুলির ব্যাপারে অবগত হয়ে। আমার নিজের জীবনেও এর মূল্য দিতে হয়েছে। আমার পরিবারকেও এর জন্য অনেক মূল্য দিতে হয়েছে, যা হয়তো খুবই বেশি ছিল। তবে আমি জানতাম যে এই দায়িত্ব আমি স্বেচ্ছায় গ্রহণ করেছি।
আমাদের স্বাধীনতার পথ এখনও শেষ হয়নি। আমরা এখনো সম্পূর্ণ মুক্ত নই, আমরা শুধু মুক্ত হওয়ার স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আমাদের পথ আরও দীর্ঘ এবং কঠিন। স্বাধীনতা মানে শুধু শৃঙ্খল ভাঙা নয়, বরং এমনভাবে জীবনযাপন করা, যা অন্যের স্বাধীনতাকেও সম্মান করে। আমাদের সত্যিকারের স্বাধীনতা এখন শুরু হয়েছে।
আমি সেই দীর্ঘ স্বাধীনতার পথ ধরে চলেছি, অনেক ভুলও করেছি। তবে আমি শিখেছি যে একটি বড় পাহাড়ে উঠে দাঁড়ালে, আরও অনেক পাহাড় সামনে অপেক্ষা করে থাকে। তাই আমি থেমে থাকতে পারি না, কারণ আমার দীর্ঘ পথচলা এখনও শেষ হয়নি।
Themes Used in “Long Walk to Freedom”
1. Freedom and Liberation (স্বাধীনতা ও মুক্তি):
“Long Walk to Freedom” বইয়ের অন্যতম প্রধান থিম হলো স্বাধীনতা ও মুক্তি। নেলসন ম্যান্ডেলার সংগ্রাম কেবল তার নিজের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা অর্জনের জন্য নয়, বরং সমগ্র দক্ষিণ আফ্রিকার কালো জনগণের জন্য স্বাধীনতা ও সমান অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইকে ঘিরে। এই থিমটি ম্যান্ডেলার দৃষ্টিভঙ্গিতে প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে তিনি বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে দেশকে মুক্তি দিতে চেয়েছিলেন। তাঁর দীর্ঘমেয়াদী কারাবাস এবং তার পরের কর্মকাণ্ড মুক্তির প্রাথমিক স্তম্ভ।
2. Injustice and Oppression (অন্যায় ও দমন):
অন্যায় ও দমনের থিমটি বইটিতে গুরুত্বপূর্ণভাবে উঠে এসেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ শাসকগোষ্ঠীর অধীনে বর্ণবৈষম্যের আইন ও নীতিমালা কালো জনগণের উপর নির্যাতন ও বৈষম্যের সৃষ্টি করেছিল। ম্যান্ডেলার অভিজ্ঞতায়, এই দমনমূলক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে লড়াই করাই ছিল তার জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক। এখান থেকে বোঝা যায়, কীভাবে বর্ণবৈষম্য (Apartheid) দক্ষিণ আফ্রিকার কালো জনগণের জীবনকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিল।
3. Courage and Perseverance (সাহস ও অধ্যবসায়):
নেলসন ম্যান্ডেলার জীবনের মূল থিমগুলির মধ্যে একটি হলো সাহস ও অধ্যবসায়। তার জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ে চ্যালেঞ্জ ও প্রতিকূলতা থাকলেও তিনি কখনো ভেঙে পড়েননি। ম্যান্ডেলার ধৈর্য ও সাহস তাকে দীর্ঘমেয়াদী কারাবাসে টিকিয়ে রেখেছিল এবং বর্ণবৈষম্যহীন দক্ষিণ আফ্রিকা গড়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার জন্য লড়াই করতে অনুপ্রাণিত করেছিল।
4. Unity and Solidarity (একতা ও সংহতি):
ম্যান্ডেলার সংগ্রামে ঐক্য এবং সংহতির ভূমিকা অপরিসীম। তিনি বারবার বিভিন্ন সম্প্রদায়কে একত্রিত করার চেষ্টা করেছিলেন, যাতে দেশকে বর্ণবাদী শাসন থেকে মুক্ত করা যায়। বিভিন্ন বর্ণ, জাতি ও ধর্মের মানুষদের একত্রিত করে ম্যান্ডেলা একটি নতুন জাতির স্বপ্ন দেখেছিলেন, যা শুধু শাসক-শাসিত নয়, বরং সমান সুযোগ ও অধিকারভিত্তিক। তার নেতৃত্বে এই ঐক্যই বর্ণবৈষম্যের অবসান ঘটাতে সহায়ক হয়েছিল।
5. Leadership and Sacrifice (নেতৃত্ব ও আত্মত্যাগ):
ম্যান্ডেলার জীবনে নেতৃত্ব এবং আত্মত্যাগের একটি গভীর দৃষ্টান্ত দেখা যায়। তিনি শুধুমাত্র নিজের ব্যক্তিগত সুবিধার কথা ভাবেননি, বরং গোটা জাতির কল্যাণের জন্য নিজের স্বাধীনতা বিসর্জন দিয়েছিলেন। ম্যান্ডেলার আত্মত্যাগ ও নেতৃত্ব বর্ণবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে একটি নতুন শক্তি এনে দিয়েছিল, যা দক্ষিণ আফ্রিকায় গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
6. Reconciliation and Forgiveness (মিলন ও ক্ষমা):
ম্যান্ডেলার জীবনের আরেকটি মূল থিম হলো মিলন ও ক্ষমা। দীর্ঘ ২৭ বছরের কারাবাসের পর তিনি প্রতিশোধ গ্রহণের পথ বেছে না নিয়ে শ্বেতাঙ্গ এবং কৃষ্ণাঙ্গ উভয় গোষ্ঠীকে একত্রিত করে একটি নতুন জাতি গঠনের চেষ্টা করেছিলেন। ম্যান্ডেলার এই উদার মনোভাব তাকে বিশ্বজুড়ে আদর্শ নেতার মর্যাদায় আসীন করেছে। ক্ষমা এবং মিলনই ছিল তার নেতৃত্বের অন্যতম প্রধান শক্তি।
7. Hope and Resilience (আশা ও স্থিতিশীলতা):
ম্যান্ডেলার সংগ্রামে আশা ও স্থিতিশীলতার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। এই থিমটি আমাদের দেখায় যে, আশা ও স্থিতিশীলতা মানুষকে সবচেয়ে প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও এগিয়ে যেতে সহায়তা করতে পারে। ম্যান্ডেলার সংগ্রাম কখনো সহজ ছিল না, কিন্তু তার অদম্য আশা তাকে সামনে এগিয়ে যেতে প্রেরণা জুগিয়েছে এবং বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে তাকে উৎসাহিত করেছে।
8. Legacy and Inspiration (ঐতিহ্য ও অনুপ্রেরণা):
ম্যান্ডেলার জীবন একটি ঐতিহ্য ও অনুপ্রেরণার প্রতীক। তার জীবনের গল্প ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে, এবং দেখাবে কীভাবে একজন ব্যক্তি তার লক্ষ্যে অবিচল থেকে সারা পৃথিবীতে পরিবর্তন আনতে পারে। ম্যান্ডেলার জীবন কেবল দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য নয়, বরং সারা বিশ্বের জন্য একটি উদাহরণ হিসেবে থাকবে।
9. Change and Progress (পরিবর্তন ও অগ্রগতি):
পরিবর্তন ও অগ্রগতি বইটির একটি গুরুত্বপূর্ণ থিম, যা ম্যান্ডেলার প্রচেষ্টার মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে। তার নেতৃত্বে দক্ষিণ আফ্রিকায় যে গণতান্ত্রিক সরকারের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল, তা ছিল একটি বড় অগ্রগতি। এই থিমটি আমাদের শেখায়, পরিবর্তন কখনো সহজে আসে না, কিন্তু ধৈর্য, অধ্যবসায় ও সংগ্রামের মাধ্যমে তা সম্ভব।
10. Human Rights and Equality (মানবাধিকার ও সমতা):
মানবাধিকার ও সমতা ম্যান্ডেলার সংগ্রামের একটি প্রধান থিম। তার জীবন ছিল বৈষম্যবিরোধী এবং সমান অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে নিবেদিত। এই থিমটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, একটি ন্যায়সঙ্গত সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য সমান অধিকার ও মানবাধিকারের গুরুত্ব অপরিসীম। ম্যান্ডেলা এই লড়াইয়ের মাধ্যমে বিশ্বকে দেখিয়েছিলেন যে কীভাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে সমতা প্রতিষ্ঠা করা যায়।
“Long Walk to Freedom” বইয়ের এই অধ্যায়গুলিতে নেলসন ম্যান্ডেলার সংগ্রামের মূল থিমগুলি উঠে এসেছে। স্বাধীনতা, সাহস, মিলন, ও সমতার প্রতি তার বিশ্বাস আজও বিশ্বব্যাপী মানুষকে অনুপ্রেরণা যোগায়।
Background
“Long Walk to Freedom” একটি আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ, যা নেলসন ম্যান্ডেলার সংগ্রামময় জীবনের প্রতিচ্ছবি তুলে ধরে। এটি ১৯৯৪ সালে প্রকাশিত হয় এবং ম্যান্ডেলার শৈশব থেকে শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রপতি হওয়া পর্যন্ত তাঁর জীবনযাত্রার বিবরণ দেয়। বইটির প্রতিটি অধ্যায় ম্যান্ডেলার ব্যক্তিগত, রাজনৈতিক এবং ঐতিহাসিক জীবনকে কেন্দ্র করে লেখা হয়েছে, যেখানে বিশেষভাবে তাঁর বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলন এবং দীর্ঘ ২৭ বছরের কারাবাসের কাহিনী স্থান পেয়েছে।
Part Eleven: Freedom (Chapter 115) অংশটি বিশেষভাবে ম্যান্ডেলার মুক্তির সময় এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের দিকে তার নেতৃত্বের দিকটি তুলে ধরে। এখানে মূলত ম্যান্ডেলার দীর্ঘ সংগ্রামের অবসান এবং তার স্বপ্নের মুক্ত দক্ষিণ আফ্রিকার বাস্তবায়নের উপর ফোকাস করা হয়েছে।
ম্যান্ডেলা ১৯১৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার একটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এবং শৈশবে তার উপজাতীয় নেতার পিতার হারানো ক্ষমতার কারণে তাকে কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হয়। যুবক বয়সে, ম্যান্ডেলা দক্ষিণ আফ্রিকার জাতিগত বৈষম্য এবং শ্বেতাঙ্গ শাসন থেকে মুক্তির জন্য তাঁর দৃঢ় সংকল্প তৈরি করেন। তার এই সংকল্পই পরবর্তীতে তাকে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দৃঢ়ভাবে অনুপ্রাণিত করে।
Chapter 115 এর পটভূমিতে আমরা দেখতে পাই যে, ম্যান্ডেলার মুক্তির সময়কালটি শুধু তার ব্যক্তিগত জীবন নয়, সমগ্র দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে বিবেচিত হয়। দীর্ঘ কারাবাস শেষে, ম্যান্ডেলা মুক্তি পেয়ে পুনরায় রাজনৈতিক সংগ্রামের নেতৃত্ব দেন। তাঁর মুক্তি শুধু তার জন্য নয়, সমগ্র দেশটির জন্য স্বাধীনতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছানোর সংকেত ছিল। ম্যান্ডেলা তার শারীরিক স্বাধীনতার পাশাপাশি মানসিক ও রাজনৈতিক স্বাধীনতার জন্যও লড়াই করেছিলেন।
এই অধ্যায়ে ম্যান্ডেলা মূলত ক্ষমা ও পুনর্মিলনের গুরুত্ব তুলে ধরেন। বর্ণবাদের অবসানের পর তিনি প্রতিশোধ না নিয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ ও সমানাধিকারভিত্তিক জাতি গড়ার লক্ষ্যে কাজ করেন। তিনি এমন এক সমাজ গড়ার আহ্বান জানান, যেখানে শ্বেতাঙ্গ এবং কৃষ্ণাঙ্গ উভয়েই শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করতে পারে।
ম্যান্ডেলার এই সংগ্রাম শুধু দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য নয়, সমগ্র বিশ্বের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে দাঁড়ায়। তাঁর জীবনের এই অধ্যায়টি আমাদের শেখায় যে মুক্তি শুধু শারীরিক নয়, বরং রাজনৈতিক, সামাজিক এবং মানসিক ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
“Long Walk to Freedom” একটি জীবনের গল্প যা আত্মত্যাগ, দৃঢ়তা এবং এক জাতির মুক্তির জন্য লড়াইয়ের সাক্ষ্য বহন করে।
Bangla Summary
নেলসন ম্যান্ডেলার আত্মজীবনী “Long Walk to Freedom” মূলত তার দীর্ঘ সংগ্রাম এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের এক বিস্তারিত বিবরণ। তিনি রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করে জনগণের কল্যাণ এবং সংবিধান রক্ষার অঙ্গীকার করেন। তাঁর ভাষণে ম্যান্ডেলা উল্লেখ করেন যে, আমরা শুধু রাজনৈতিক মুক্তি অর্জন করেছি, তবে এখনো আমাদের দরিদ্রতা, বৈষম্য, এবং নির্যাতনের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।
ম্যান্ডেলা বলেন, এই দেশে আর কোনো নাগরিক অন্যের দ্বারা অত্যাচারিত হবে না। সাদা-কালো নির্বিশেষে সবাই একসঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে জীবনযাপন করবে। তিনি বর্ণবৈষম্যের কারণে জাতির দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতর উল্লেখ করেন এবং বলেন যে এই ক্ষত থেকে মুক্তি পেতে আমাদের অনেক বছর সময় লাগতে পারে।
তিনি সেইসব বীরদের স্মরণ করেন যারা আত্মত্যাগ করে এবং সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। ম্যান্ডেলা বলেন, দেশের স্বাধীনতা মূল্যবান এবং আমরা এই স্বাধীনতাকে যথার্থভাবে সম্মান জানাবো। তিনি উল্লেখ করেন যে, অনেক সাধারণ নারী-পুরুষ এই সংগ্রামে সাহসের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেছে এবং তাদের সাহসিকতার কারণে একটি বৃহত্তর পরিবর্তন এসেছে।
ম্যান্ডেলা সবসময়ই একটি সোনালী ভবিষ্যতের আশায় ছিলেন, যেখানে কোনো মানুষ ধর্ম বা বর্ণের কারণে অন্যকে ঘৃণা করবে না। তাঁর মতে, মানুষের দুটি প্রধান দায়িত্ব রয়েছে—একটি হলো পরিবারের প্রতি এবং অন্যটি দেশের প্রতি। তবে, দক্ষিণ আফ্রিকার কঠোর পরিস্থিতিতে এই দুটি দায়িত্ব পালন করা একসঙ্গে প্রায় অসম্ভব ছিল। তিনি নিজেও দেশবাসীর প্রতি কর্তব্য পালন করতে গিয়ে নিজের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন।
ম্যান্ডেলা আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসে যোগদান করেন এবং ধীরে ধীরে তাঁর ব্যক্তিগত স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা দেশের জনগণের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে মিলে যায়। তিনি উপলব্ধি করেন যে যারা স্বাধীনতা কেড়ে নেয় তারাও নিজেদের ঘৃণার কারাগারে বন্দি থাকে।
২৭ বছর কারাভোগের পর মুক্ত হয়ে ম্যান্ডেলা অত্যাচারিত এবং অত্যাচারী উভয়কেই মুক্ত করার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেন। যদিও অনেকে মনে করেছিল যে তাঁর লক্ষ্য সফল হয়েছে, ম্যান্ডেলা বিশ্বাস করতেন যে প্রকৃত স্বাধীনতা তখনও অর্জিত হয়নি। প্রকৃত স্বাধীনতার পথে আমাদের আরো অনেক দূর যেতে হবে এবং সেই পথের দায়িত্বও তিনিই বহন করবেন।
English Summary
Nelson Mandela’s autobiography, “Long Walk to Freedom,” details his long struggle and fight against apartheid in South Africa. Upon assuming office as the President, Mandela pledged to uphold the constitution and work for the welfare of the republic and its people. In his speech, he highlighted that while political freedom has been achieved, the battle against poverty, inequality, and oppression still continues.
Mandela emphasized that no citizen of the country would be oppressed by another. He envisioned a society where people of all races, black and white, would walk together in harmony without any form of discrimination. He also acknowledged that the scars of racial segregation had deeply affected the nation and that it might take years to heal those wounds.
In his speech, Mandela paid tribute to the many heroes who sacrificed their lives in the fight for freedom. He spoke of honoring the hard-earned freedom by respecting it fully. Mandela also recognized the courage and determination of ordinary men and women who, with bravery and compassion, contributed to the change that transformed the nation.
Mandela always hoped for a brighter future where no one would hate others based on race or religion. He believed that people must learn to hate, and if they can learn hate, they can easily be taught to love. He also reflected on the two obligations every person has—one to their family and the other to their country. However, in the harsh reality of South Africa, fulfilling both responsibilities simultaneously was almost impossible. Mandela himself had to endure the pain of being separated from his family to serve his country.
To defend the freedom of his people, Mandela joined the African National Congress (ANC), and over time, his personal desire for freedom aligned with the collective aspiration of his people. He realized that those who oppress others are not free themselves; they are trapped in a prison of hatred.
After spending 27 years in prison, Mandela embarked on a mission to liberate both the oppressed and the oppressor. Though many believed that his mission was complete when black South Africans gained the right to vote, Mandela knew the journey toward true freedom had only just begun. For him, the true test of freedom lay ahead, and he committed himself to continue the fight with unwavering dedication.