Civil Disobedience by H.D. Thoreau

Civil Disobedience by Henry David Thoreau

হেনরি ডেভিড থরো তার “Civil Disobedience” নামক প্রবন্ধে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে একজন নাগরিকের দায়িত্ত্ব বিশেষ করে তার নৈতিক দায়িত্ব নিয়ে আলোচনা করেছেন। এই প্রবন্ধে তিনি তার নির্বাচনী কর প্রদানে অস্বীকৃতি জানানোর কারনে জেলখানায় যাওয়ার অভিজ্ঞতাও বর্ণনা করেন। তার কর না দেয়ার কারন এটা ছিল না যে তিনি এই কর দেয়ার সামর্থ রাখতেন না অথবা এটাও ছিল না যে তিনি কর পরিশোধের নির্ধারিত সময়সীমা অতিক্রম করেছিলেন। তিনি এই কর না দেয়ার মাধ্যমে আসলে সরকারের কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে তার নৈতিক আপত্তি প্রকাশ করেছিলেন। আর এটাকে তিনি তার একটি নাগরিক দায়িত্ব মনে করেন। যেহেতু করই হল একজন নাগরিকের পক্ষ থেকে সরকারের কর্মকান্ডে সাহায্য করা ও বেগবান রাখার প্রধান রাস্তা তাই তিনি কর প্রদানে অস্বীকৃতি জানান।
থরো তার রচনাটি শুরু করেন বাস্তবে সরকারের কি ভূমিকা রয়েছে তা উল্লেখ করে। তিনি বিশ্বাস করেন যে সরকার কম শাষন করে সেটিই সর্বোত্তম সরকার। তিনি তার সমসাময়িক সরকারকে সমাজ ও ব্যাক্তি উভয়ের জন্যে একটি বাধা হিসেবে বিবেচনা করেছেন। কারন এর প্রধান লক্ষ্যই থাকে সামাজিক কাজ ও উন্নয়ন বাদ দিয়ে ব্যবসা বানিজ্য ও রাজিনীতির চিন্তা করা, মানুষকে সাহায্য করা নয়।
যদিও তিনি সরকারের সমালোচনা করছেন তাই বলে এর পরিবর্তে তিনি অরাজকতাকে সমর্থন করেন না। তিনি এই প্রবন্ধে উল্লেখ করেন তিনি সরকারের বিলোপ চান না বরং তিনি চান সরকার যাতে আরো উন্নততর ও কল্যানকর হয়ে ওঠে। তিনি এমন একটি সরকার চান যেটি ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় সর্বদা উদ্বিগ্ন থাকবে। তার দাবির স্বপক্ষে তিনি ন্যায়ের একটি ধারনা কল্প দাড় করান যার মূল বিষয় হল কেন একটি সরকারকে ন্যায়ের উপর দৃষ্টি রাখতে হবে।
থরোর মতে সত্যিকার গণতন্ত্র মানে গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র নয় যেখানে সংখ্যাগুরুরা শাষন করবে। জনগন তার মতামত প্রকাশ করবে। আর এভাবেই সরকার তার কর্মকান্ড ও আঈন ঠিক করে নেবে। বেশিরভাগ সরকার দাবি করে যে তারাই আসল গণতান্ত্রিক কিন্তু তারা আসলে গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র, যেখানে তারা তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করে যারা তাদের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেবে। যার কারনে গণতন্ত্র অকার্যকর হয়ে যায়। আরো স্পষ্ট করে বললে বেশিরভাগ সিদ্ধান্ত সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রতিনিধির মাধ্যমে নেয়া হয়। সংখ্যালঘুরা তখন গণতন্ত্রের স্বাদ পায় না।
থরোর মতে ন্যায় কখনোই সংখ্যাগরিষ্ঠ শাষকগোষ্ঠীর মতের উপর নির্ভর করে না। এর উদাহরণ হল অ্যামেরিকান সরকার, যারা বিবেকের জন্যে কোন জায়গা রাখে নাই। তিনি তার কথার স্বপক্ষে উদাহরন টানেন যন্ত্রের মত আমেরিকার সৈন্যদের, যারা ন্যায় ও অন্যায় বাছবিচার না করেই সরকারের খায়েশ ও ইচ্ছাকে বাস্তবায়ন করছে।
যখন একটি সরকার এমন স্বৈরাচারী আচড়ন করে অথবা সরকারের কাজ দেখে মনে হয় জনগণের একটি বিশাল অংশ সরকারের দাসে পরিণত হয় তখন জনগণই একটি বিপ্লবের কারন হয়ে দাঁড়ায়। ভোটকে তিনি একটা খেলার মত দেখেছেন। একজন মানুষ তাকেই ভোট দেয় যাকে ভোট দেয়া তার সঠিক মনে হয়। কিন্তু সে যে আসলে সঠিক তার কতটুকু নিশ্চয়তা রয়েছে। সে এটা সংখ্যাগরিষ্ঠের উপর ছেড়ে দেয় কিন্তু তাদের মাঝে খুব কমই সদগুণাবলী বিদ্যমান থাকে। প্রচলিত রেওয়াজ দেখে যদি দেশের প্রধান নির্বাচন করা হয় তবে তা দেশের জন্যে কোন মঙ্গল বয়ে আনবে না।
এরপর থরো দাস প্রথা নিয়ে লিখেন। তিনি এই দাসপ্রথার বিলোপ আশা করেন। তিনি মেক্সিকো যুদ্ধেও বিরুদ্ধে ছিলেন কারন এটি ছিল অন্যায় যুদ্ধ আর এখানে দাসপ্রথাকে প্রতিষ্ঠা করা হবে। তিনি খেয়াল করলেন এক বিশাল সংখ্যক জনগন তাদের বিবেককে সরকারের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। তারা দেখতে পাচ্ছে সরকার একটি অন্যায় কাজে নেমেছে কিন্তু তারা প্রতিবাদ না করে সরকারকে আরো সাহায্য করছে। তিনি বলেন তারা যা করছে আমি তা করতে পারি না। আমি সরকারের এমন নীতির সাথে সম্মত হতে পারি না যা দাসপ্রথাকে বৈধতা দান করে এবং এই মন্দ নীতির প্রতিষ্ঠার জন্যে অন্য দেশকে আক্রমন করা হয়। এদিকে তিনি ম্যাসাচুসেটস এর ব্যাবসায়ী ও কৃষকদের উদাহরন টানেন যাদের অধিকাংশই সরকারের এই নীতির সাথে একাত্ততা পোষন করে কারন তারা নবজাতীর জন্যের ন্যায় প্রতিষ্ঠার চেয়ে টাকা তৈরীতে বেশী আগ্রহী।
দেশের পরিবর্তন ও পরিগঠনে এরাই সবচেয়ে বড় বাধা যারা সব কিছু বুঝেও এখনো সরকারকে অর্থনৈতিকভাবে ও তার সাথে সম্পর্ক রেখে সহায়তা করে যাচ্ছে। তিনি বলেন যদি কেউ কোন খারাপকে দূর করতে না পারে তবে তার প্রথম দায়িত্ব হচ্ছে এই খারাপ থেকে নিজের হাতকে ধুয়ে ফেলা এবং তাকে কোন ধরনের সাহায্য না করা। এবার প্রশ্ন করেন, তাহলে যারা দাসপ্রথা আর যুদ্ধের বিপক্ষে তাদের কি অবস্থা। তিনি নিজেই উত্তর দেন যে তারা এই কাজের জন্যে সামনে না এসে বরং অন্যের অপেক্ষা করছে যারা তাদের হয়ে প্রতিবাদ করবে।
এই অন্যায় আইনের ব্যাপারে আমরা কয়েকটি উপায় অবলম্বন করতে পারি আর তা হল, হয় আমরা তা মেনে নিতে পারি বা সংশোধন করতে পারি অথবা যতক্ষন পর্যন্ত আমরা তা পরিবর্তন করতে না পারি ততক্ষন পর্যন্ত আমরা তা মেনে নিতে পারি। যদি অন্যায় করা সরকারী আইনের একটি অখন্ড উপাদানে পরিণত হয় তখন এটা আস্তে আস্তে ধ্বংশের দিকে চলে যায়। যদি আইন একজনকে দিয়ে অন্যের উপর অন্যায় করায় তবে সে আইন অবশ্যই ভেঙ্গে দেয়া উচিত।
রাষ্ট্র কখনো যার কাছে টাকা নেই তার উপর কর আরোপে দ্বিধা করে না। অন্য দিকে ধনীরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি হয়ে যায় যেগুলো তাদেরকে আরো ধনী করে তোলে। যত টাকা ততই নৈতিক গুনাবলীর অবনতি। ধনীরা কিভাবে টাকা খরচ করতে হবে সে ব্যাপারে মাথা ঘামায়।
জনগন সরকারের শাস্তিমূলক আচড়নে ভয় পায় কিন্তু লেখক সেরকম নন কারন তিনি সরকারের নিরাপত্তার উপর নির্ভর করেন না। তিনি অন্যায়ভাবে সম্পদও কুক্ষিগত করেননি যাতে করে তিনি অন্য ধনীদের মত এই ভয়ে তটস্থ থাকবেন সরকার হয়তো তার সম্পদ বাজেয়াপ্ত করবে। তিনি জানেন সরকার বড়জোর তাকে আর তার সন্তানদের কিছু সময় হয়তো হয়রানী করতে পারবে।
লেখক ৬ বছর ধরে তার নির্বাচনি কর মাত্র ২ ডলার দিচ্ছিলেন না। এটা এজন্যে নয় যে তার টাকার অভাব বরং এটাকে তিনি অন্যায় ভেবেছেন। এর কারনে থরোকে জেলখানায় যেতে হয়েছে। তিনি মনে করেন সরকার তাকে জেলে পুরে আসলে নির্বুদ্ধিতার পরিচয় দিয়েছে। সরকার ভেবেছে যে তিনি একটি আত্মা ছাড়া রক্ত মাংশের মানুষ। সরকার তার দেহকে শাস্তি দিতে পারে কিন্তু তার আত্মাকে শাস্তি দিতে পারে না। সরকারের যতই শক্তি থাকুক মানুষের নৈতিক অনুভূতির সাথে সে যুদ্ধ করতে পারবে না।
থরো মনে করতেন যে বিশ্বাসের দিকে মানুষকে আহবান করেন সেটা পালন করতে হয়।  তাই তিনি নিজেই কেন ও কিভাবে কর দিতে অস্বীকৃতি জানালেন সে ব্যাপারে লিখলেন। আইন অমান্য করার কারনে তাকে একরাত জেলও খাটতে হয়েছে। জেলখানায় থাকা অবস্থায় তিনি বলার মত অপ্রীতিকর কিছু পাননি।  যাই হোক তিনি এক রাতের জন্যে জেলখানায় গেলেন। সেখানে তার কিছু নতুন অভিজ্ঞতা হয়েছিল। জেলখানায় তার কক্ষটি এবং তার কক্ষের সঙ্গী উভয়কেই তার পসন্দ হয়েছিল। জেলার তার সঙ্গীকে পরিচয় করিয়ে দিলেন একজন বুদ্ধিমান  ও প্রথম শ্রেণীর নাগরিক হিসেবে। তাদের কক্ষের তালা লাগানো হলে তার সঙ্গী তাকে দেখিয়ে দিলেন কোথায় কি রাখতে হবে বা জেলখানা বিষয় গুলো কিভাবে নিয়ন্ত্রন করা যায়। তারপর তার সঙ্গীকে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন কিভাবে সে এখানে এসেছে। সে তাকে জবাব দেয় সে খড়ের গাদায় আগুন দেয়ার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে কিন্তু সে তা করেনি। মূল ঘটনাটা ছিল এমন যে, সে একবার খড়ের গাদায় পাইপ টানতে টানতে ঘুমিয়ে পড়ে আর তার পাইপ থেকে সেখানে আগুন লেগে যায়। সে তার বিচারের জন্যে আজ প্রায় তিন মাস অপেক্ষা করছে। এখনো তার বিচার শুরু হয় নি তবে এখানে থেকে সে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে। তার এখন আর তেমন কোন অসুবিধা হচ্ছে না।

তার এক রাতের কারাবাসের মাধ্যমেই অনেক পরিবর্তন সাধিত হয়।

  • প্রথম পরিবর্তন হল থরোর মনের পরিবর্তন। সে দুনিয়াকে নতুনরুপে দেখতে শুরু করে।
  • ২য় পরিবর্তন হল বাহিরের জগতে তার বন্ধু বান্ধব ও প্রতিবেশীর আচড়ন। তিনি এ সময় কে প্রকৃত বন্ধু আর কে সুসময়ের বন্ধু চিনতে পারেন।

 

এরপর তিনি উল্লেখ করেন তার কর প্রদানে অক্ষমতার কারনে সরকার বা রাষ্ট্র তাকে নিয়ন্ত্রনের জন্যে জেলে পুরলেও তার মন কে তো আর নিয়ন্ত্রন করতে পারছে না। ইহা কখনোই তার নৈতিক অনুভূতিকে নিয়ন্ত্রন করতে পারবে না। এই নৈতিক অনুভূতিকে তিনি আখ্যা দেন ন্যায়ের অনুভূতি হিসেবে।
থরোর মতে জনগণের সরকারকে ক্ষমতার ব্যবহার করতে গেলে অবশ্যই জনগণের সম্মতি নিয়েই ব্যবহার করতে হবে। তিনি আরো লিখেন প্রত্যেক নাগরিকেরই যেমন এই অধিকার  আছে যে সরকারকে অর্থনৈতিক সাহায্য বন্ধ করার মাধ্যমে তার সম্মতি প্রত্যাহার ও বন্ধ করার তেমনি সমাজের একজন সক্রিয় সদস্য হিসেবে তার কিছু দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে।
তিনি আরো বলেন করের মাধ্যমে সরকারের প্রতি অর্থনৈতিক সাহায্য বন্ধ রাখা উচিত যতক্ষন না সরকার ন্যায়ের প্রতি দৃষ্টি না দেয়।

Prose (Masters) Code: 311111

NameStatus
The American Scholar by Emerson Published
Civil Disobedience by H.D Thoreau Published
Shakespeare's Sister by Virginia WoolfComing Soon
Tradition and Individual Talent by T.S EliotComing Soon
Literature and Society by F.R LeavisComing Soon
Comment us if you need any translation, or visit our Facebook Page.

Author

  • Henry David Thoreau

    হেনরি ডেভিড থরো (ইংরেজি: Henry David Thoreau; ১২ই জুলাই, ১৮১৭ – ৬ই মে ১৮৬২) একজন মার্কিন প্রকৃতিবাদী, নিবন্ধকার, কবি ও দার্শনিক ছিলেন। তিনি একজন শীর্ষস্থানীয় তুরীয়বাদী। তাঁর ওয়াল্ডেন নামক গ্রন্থে তিনি প্রাকৃতিক পরিবেশে সরল জীবনযাপনের উপরে তাঁর চিন্তাধারা প্রকাশ করেন। আর সিভিল ডিজোবিডিয়েন্স ("নাগরিক অবাধ্যতা") শীর্ষক নিবন্ধে (আদিতে যেটি রেজিস্ট্যান্স টু সিভিল গভার্নমেন্ট অর্থাৎ "নাগরিক সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ" শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছিল) তিনি অন্যায্য রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবাধ্যতা প্রদর্শনের স্বপক্ষে যুক্তি প্রদান করেন। এই দুইটি রচনাকর্মের জন্য তিনি সর্বাধিক খ্যাতি অর্জন করেন।

    View all posts

Leave a Comment