Shooting an Elephant Bangla Summary

Table of Contents

Shooting an Elephant by George Orwell

জর্জ অরওয়েলের বিখ্যাত রচনা “শুটিং অ্যান এলিফ্যান্ট” ঔপনিবেশিক শাসনের নৈতিক দ্বন্দ্ব এবং সাম্রাজ্যবাদের অবমাননাকর দিকগুলো তুলে ধরে। গল্পটি বর্মার প্রেক্ষাপটে রচিত, যেখানে ব্রিটিশ শাসনের অধীনে থাকা একজন ইউরোপিয়ান পুলিশ অফিসারের অভিজ্ঞতা বর্ণিত হয়েছে। গল্পটি একদিকে লেখকের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে উপস্থাপিত হলেও, এতে ঔপনিবেশিক শাসনের নিষ্ঠুরতা, স্থানীয় জনগণের প্রতিক্রিয়া এবং শাসকের নৈতিক সংকট পরিষ্কারভাবে ফুটে উঠেছে। মূল ঘটনাটি এক পাগল হাতিকে গুলি করে হত্যা করার প্রসঙ্গে হলেও, এটি সাম্রাজ্যবাদী শাসনের অন্তর্নিহিত অমানবিকতা ও নৈতিক দ্বন্দ্বের প্রতীক হিসেবে কাজ করে।

বিষয়তথ্য
লেখকজর্জ অরওয়েল (১৯০৩-৫০)
প্রকাশের তারিখ১৯৩৬
ধরনঅপ্রকাশ্য প্রবন্ধ (Non-fictional Essay)
সময়ের সেটিং১৯২০ এর দশক
স্থানীয় সেটিংমুলমেইন, নিম্ন বার্মা

Bangla Short Translation

মৌলমেইন, যা বার্মার একটি শহর, সেখানে আমি কাজ করতাম, আর মানুষজন আমাকে বেশ অপছন্দ করতো। আমি ছিলাম ইউরোপীয় এবং পুলিশ অফিসার, তাই স্বাভাবিকভাবেই বার্মিজদের চোখে আমি ছিলাম একঘরে। তবে আমাকে দেখতে চায়নি, যদিও কিছু দাঙ্গা বা সংঘর্ষের মতো গুরুতর কিছু তখনও হয়নি। মানুষজন কখনও সাহস করে ইউরোপীয়ানদের ওপর হামলা করতো না, তবে বাজারে কোনও ইউরোপীয় মহিলা গেলে কেউ তার পোশাকে পানের পিক্ ছুঁড়ে দিতো। আমার দায়িত্ব ছিল, যতটা সম্ভব শান্তি বজায় রাখা।

সত্যি বলতে, বার্মিজদের প্রতি আমার সহানুভূতি ছিল। সাম্রাজ্যবাদের প্রতি আমার এক ধরনের ঘৃণা জন্ম নিয়েছিল। মনে হয়েছিল, এটা অন্যায় এবং বর্বর। অথচ চাকরি হিসেবে আমাকে এটাই করতে হতো। অনেক সময় আমি নিজেকে এই শাসন ব্যবস্থার অংশ হয়ে অপরাধী মনে করতাম। কারাগারে বন্দী অপরাধীদের মলিন অবস্থা, নির্যাতন, এবং বেত্রাঘাতের দৃশ্য দেখে নিজেকে খুবই অপরাধী মনে হতো। কিন্তু আমি তখনও বুঝতে পারিনি যে, সাম্রাজ্যবাদ কীভাবে আসলে ধ্বংসের দিকে এগোচ্ছে।

একদিন সকালে, পুলিশ স্টেশনের সাব-ইন্সপেক্টর আমাকে ফোন করে জানায়, একটি হাতি শহরের বাজারে তাণ্ডব চালাচ্ছে। আমাকে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার অনুরোধ করে। আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছালাম। আমার সাথে ছিল কেবল একটি রাইফেল। যদিও এই রাইফেলটি হাতির জন্য যথেষ্ট ছিল না, তবে আমি যেকোনো পরিস্থিতিতে আত্মরক্ষার জন্য প্রস্তুত ছিলাম।

সেই সময় আমি যখন পরিস্থিতি দেখলাম, জনতার ভিড় আমাকে ঘিরে ফেললো। লোকেরা হাতির বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া দেখানোর জন্য আমার দিকে তাকিয়ে ছিল। হাতিটি মাঠে দাঁড়িয়ে ঘাস খাচ্ছিল। আমি তখন ভীষণ চাপে ছিলাম, যেন এই লোকগুলোর প্রত্যাশার বোঝা আমার ওপর চেপে বসেছে। আমি হাতিটিকে মারতে চাইনি, তবে পরিস্থিতি এমনভাবে তৈরি হয়েছিল, আমি গুলি না করলে অসম্মানিত হতে পারতাম। এক ধরনের লজ্জা থেকে আমি নিজেকে রক্ষা করতে, আর তাদের প্রত্যাশা পূরণ করতেই আমি হাতিটিকে গুলি করি।

প্রথম গুলিতে হাতিটি পড়ে গেলেও তাৎক্ষণিকভাবে মারা যায়নি। হাতিটি বেদনাদায়কভাবে নড়তে থাকে। অনেকগুলো গুলি করার পরও সে বাঁচতে চেষ্টা করছিল। আমার মধ্যে প্রচণ্ড অপরাধবোধ কাজ করতে লাগলো, কিন্তু আমি তখনও বুঝতে পারছিলাম না, আমি কেন এই কাজটি করলাম।

এটি সাম্রাজ্যবাদের একটি প্রকৃত উদাহরণ। একজন শ্বেতাঙ্গ ব্যক্তি হিসেবে আমাকে এক অসম শক্তির সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, যা আমাকে আমার নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাজ করতে বাধ্য করে।

Read More: Introduction to Prose: Fiction and Non-Fiction

Shooting an Elephant Symbols

Shooting an Elephant” গল্পে ব্যবহৃত প্রতীকসমূহের মাধ্যমে ঔপনিবেশিক শাসন ও শক্তি সম্পর্কিত গভীর অর্থ ফুটে ওঠে। প্রতীকগুলো যেমন- হাতি, ভিড়, প্রভৃতির মধ্যে দিয়ে গল্পের মূল থিমগুলি প্রকাশ পায়। নিচে প্রতীকসমূহের বিশ্লেষণ দেওয়া হলো:

হাতি (The Elephant)

হাতি এই গল্পে বিভিন্ন স্তরের প্রতীক হিসেবে কাজ করে। এটি শুধু একটা পশু নয়, বরং ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিভিন্ন দিককে তুলে ধরে।

  1. সাম্রাজ্যবাদ ও ক্ষমতা (Imperialism and Power): হাতির আকার ও শক্তি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের শক্তিমত্তা ও প্রভাবের প্রতীক। হাতির বিশালতা ব্রিটিশদের ঔপনিবেশিক শাসনের পরিমাণ এবং তাদের কর্তৃত্বের প্রতিফলন। ঠিক যেমনভাবে হাতি বড় ও ক্ষমতাশালী, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যও বার্মার মতো দেশগুলোর ওপর শক্তি প্রয়োগ করেছে।
  2. ভার ও শোষণ (Burden and Oppression): হাতির শারীরিক ভারপ্রভাব ঔপনিবেশিক শাসনের শোষণমূলক প্রকৃতিকে প্রতিফলিত করে। গল্পে, হাতির আচরণ এক ধরনের ভারাক্রান্ত অবস্থার প্রতিনিধিত্ব করে, যা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অধীনে থাকা জনগণ এবং উপনিবেশকদের মাঝে একইভাবে অনুভূত হয়।
  3. প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (Resistance and Rebellion): হাতির বিদ্রোহমূলক আচরণ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে দমনকৃত মানুষের প্রতিরোধের প্রতীক। হাতির rampage বা উন্মত্ততা প্রমাণ করে যে অত্যাচারিত জনগোষ্ঠী সময়মতো তাদের শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে।

ভিড় (The Crowd)

গল্পে বর্ণিত বার্মিজ মানুষের ভিড় ঔপনিবেশিক শাসনের অধীনস্ত জনগোষ্ঠীর ক্ষোভের প্রতীক। তাদের উপস্থিতি এবং প্রত্যাশা, মূলত ঔরওয়েলকে একটি নির্দিষ্ট কাজ করতে বাধ্য করে, যা ঔপনিবেশিক শাসনে নিহিত ক্ষমতার দ্বন্দ্ব ও সংস্কৃতির সংঘাতকে বোঝায়।

উর্দি (Orwell’s Uniform)

উর্দি ঔরওয়েলের ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের একজন কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় তুলে ধরে। এই উর্দি মূলত কর্তৃত্ব এবং নিয়ন্ত্রণের প্রতীক, তবে একই সঙ্গে এটি ঔরওয়েলের জন্য এক ধরনের ভার হয়ে দাঁড়ায়। সাম্রাজ্যবাদের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি নিজের নৈতিকতার সঙ্গে সংকটে পড়েন। এই উর্দি তার ক্ষমতার চিহ্ন হলেও, সেটি তার ব্যক্তিগত নৈতিকতার ওপর চাপ সৃষ্টি করে।

রাইফেল (The Rifle)

রাইফেল উপনিবেশিক শাসকের কর্তৃত্ব এবং শক্তির প্রতীক। এটি বোঝায় যে ঔরওয়েলের হাতে একটি মারাত্মক ক্ষমতা রয়েছে। রাইফেলটি ব্যবহার করার বা না করার সিদ্ধান্ত তার মানসিক দ্বন্দ্বকে প্রকাশ করে, যেখানে একদিকে রয়েছে তার শাসকের নির্দেশনা মেনে চলা, আর অন্যদিকে রয়েছে তার ব্যক্তিগত নীতিবোধ। রাইফেলের মাধ্যমে ঔরওয়েল সাম্রাজ্যবাদী শাসনের অত্যাচার এবং তার নিজের নৈতিক সংকটের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করেন।

“ফুল” (The Fool)

গল্পে “ফুল” শব্দটি ঔরওয়েল নিজেকে বর্ণনা করতে ব্যবহার করেছেন, যখন তিনি বার্মিজ মানুষের প্রত্যাশার কাছে আত্মসমর্পণ করেন। এই শব্দটি মূলত বোঝায় যে, ঔরওয়েল নিজেই তার কর্তৃত্ব থাকা সত্ত্বেও, জনতার চাপে পড়ে অযৌক্তিকভাবে কাজ করেছেন। তিনি বুঝতে পেরেছেন যে, ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও, তিনি বার্মিজ জনসাধারণের প্রভাবিত হয়েছিলেন এবং তার কার্যক্রম তাদের ইচ্ছার প্রতিফলন ছিল।

মৃত মানুষ (The Dead Man)

হাতির rampage-এ নিহত হওয়া মৃত মানুষটি ঔপনিবেশিক শাসনের ধ্বংসাত্মক প্রভাবের প্রতীক। তার মৃত্যু উপনিবেশবাদী শাসনের অধীনে মানুষের ভোগান্তি এবং সহিংসতার এক নিষ্ঠুর উদাহরণ। এটি বোঝায় যে, সাম্রাজ্যবাদ শুধু শাসিতদের জন্য নয়, শাসকদের জন্যও ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনে।

হাতির মৃত্যু (The Elephant’s Death)

হাতির মৃত্যু একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে ঔরওয়েলের নৈতিক সংকট এবং তার সিদ্ধান্তের অপ্রতিরোধ্য প্রভাবকে প্রতিফলিত করে। হাতির ধীরে ধীরে মৃত্যু ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ক্রমশ বিলুপ্তির প্রতীক। এটি ঔরওয়েলের অন্তর্দ্বন্দ্বকে আরও স্পষ্ট করে তুলে ধরে, যে তিনি সাম্রাজ্যবাদের অংশ হিসেবে কিছু কাজ করলেও, সেই কাজগুলো নৈতিকভাবে তার কাছে সঠিক মনে হয়নি।

এইভাবে, প্রতীকগুলো একদিকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের প্রভাবকে বোঝায়, অন্যদিকে উপনিবেশিত জনগণের আভ্যন্তরীণ প্রতিরোধ ও স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করে।

Shooting an Elephant Themes

Shooting an Elephant গল্পের প্রধান থিমগুলো ঔপনিবেশিক শাসনের প্রভাব, নৈতিকতা, ক্ষমতা এবং সাংস্কৃতিক দ্বন্দ্বের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে। নিচে এই থিমগুলো আরও বিশদভাবে আলোচনা করা হলো:

সাম্রাজ্যবাদ ও ঔপনিবেশিকতা (Imperialism and Colonialism)

গল্পটির প্রধান থিম সাম্রাজ্যবাদ ও ঔপনিবেশিকতা, যা ব্রিটিশ শাসনের অধীনে বার্মিজ জনগণের জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে। সাম্রাজ্যবাদ কেবল শোষিতদেরই নয়, শাসকদেরও মানবিক গুণাবলি নষ্ট করে দেয়। ঔপনিবেশিক শাসনের প্রভাব ঔরওয়েলের মনে এক নৈতিক সংকটের সৃষ্টি করে, যেখানে তিনি অনুভব করেন যে, ঔপনিবেশিক শক্তির প্রতিনিধি হিসেবে তিনি নিজেই শোষণের যন্ত্র হয়ে উঠেছেন। এই থিমের মাধ্যমে ঔরওয়েল সাম্রাজ্যবাদের ধ্বংসাত্মক প্রভাবকে তুলে ধরেছেন, যা উভয় পক্ষকে অবমাননা করে।

ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব (Power and Authority)

ক্ষমতা গল্পের একটি কেন্দ্রীয় থিম। এখানে ব্রিটিশ শাসক ও বার্মিজ জনগণের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। ঔরওয়েল ক্ষমতার অধিকারী হলেও, জনগণের চাপের কারণে তিনি নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাজ করতে বাধ্য হন। এই থিমের মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে যে, ঔপনিবেশিক শাসনে শাসকরা ক্ষমতা ধরে রাখতে চাইলেও, কখনও কখনও তাদের সিদ্ধান্ত মূলত শাসিতদের ইচ্ছার উপর নির্ভর করে।

সমাজের সাথে খাপ খাওয়ানো ও বিদ্রোহ (Conformity and Rebellion)

গল্পে ঔরওয়েল সমাজের সাথে খাপ খাওয়ানোর চাপ অনুভব করেন। তার মনে একটি বড় দ্বন্দ্ব ছিল, যেখানে তিনি সমাজের চাপ মেনে চলবেন নাকি নিজের নৈতিকতার প্রতি বিশ্বস্ত থাকবেন। হাতি গুলি করার সিদ্ধান্তটি তার জন্য সম্মতি ও বিদ্রোহের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে, কারণ এটি কেবল তার ব্যক্তিগত ইচ্ছার বিপরীতে গিয়ে সমাজের চাপে কাজ করার উদাহরণ নয়, বরং তার অবস্থানের বিরুদ্ধে যাওয়ার অভিব্যক্তিও। ঔরওয়েলের এই অভিজ্ঞতা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের আভ্যন্তরীণ সংকটকে তুলে ধরেছে।

নৈতিকতা ও নৈতিক দ্বন্দ্ব (Ethics and Morality)

নৈতিক দ্বন্দ্ব গল্পের একটি মূল থিম। ঔরওয়েল বারবার তার কর্মের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি একদিকে বার্মিজ জনগণের আশা পূরণ করার চাপে ছিলেন, অন্যদিকে তার নিজের নৈতিক মানসিকতা অনুযায়ী কাজ করার জন্য সংগ্রাম করেছেন। হাতি গুলি করার ঘটনাটি তার জন্য নৈতিকতার বিরুদ্ধে যাওয়া এবং ঔপনিবেশিক ভূমিকার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার একটি বড় উদাহরণ। এই থিমের মাধ্যমে ঔরওয়েল দেখিয়েছেন কিভাবে একজন ব্যক্তি নৈতিকতা ও দায়িত্বের মধ্যে একটি জটিল অবস্থানে পড়তে পারে।

সাংস্কৃতিক সংঘাত (Cultural Clash)

সাংস্কৃতিক সংঘাত পুরো গল্পে স্পষ্টভাবে বিদ্যমান। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী সংস্কৃতি এবং বার্মিজ সংস্কৃতির মধ্যে তীব্র মতপার্থক্য এবং আচরণগত বৈষম্য রয়েছে। এই সংঘাত বার্মিজ জনগণ ও ব্রিটিশ শাসকদের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েনকে তীব্র করেছে। ঔরওয়েল প্রতিনিয়ত এই সাংস্কৃতিক দ্বন্দ্বের মাঝে আটকে পড়েছেন, যেখানে তাকে ব্রিটিশ শাসনের অধীনে থাকা বার্মিজদের সাথে আচরণ করতে হয় এবং একই সঙ্গে তার ব্যক্তিগত মতামতও রক্ষা করতে হয়।

মানবিকতা হারানো (Dehumanization)

মানবিকতা হারানো একটি গুরুত্বপূর্ণ থিম হিসেবে উঠে এসেছে। ঔপনিবেশিক শাসন শাসক এবং শাসিত উভয়ের মানবিক গুণাবলি ধ্বংস করে দেয়। বার্মিজ জনগণ কেবল শোষিত হয় না, তাদের মানবিক মূল্যও হারিয়ে ফেলে। অন্যদিকে, ব্রিটিশ কর্মকর্তারা শুধু কর্তৃত্বের হাতিয়ার হয়ে দাঁড়ায়। ঔরওয়েলের চরিত্রে দেখা যায় কিভাবে তিনি ক্ষমতার অধিকারী হয়েও ব্যক্তিগত নৈতিকতা হারাচ্ছেন এবং তার কার্যকলাপ তাকে আরও বিচ্ছিন্ন করে তুলছে।

জাতিগত এবং বর্ণগত সম্পর্ক (Ethnic and Racial Relations)

গল্পে জাতিগত ও বর্ণগত সম্পর্ক এবং তার টানাপোড়েন স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে। ব্রিটিশ শাসক এবং বার্মিজ জনগণের মধ্যে জাতিগত ও বর্ণগত বৈষম্য গল্পের কেন্দ্রে রয়েছে। এই বৈষম্য ক্ষমতার সম্পর্ককে আরও তীব্র করেছে এবং ঔরওয়েলকে দ্বন্দ্বের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। ঔপনিবেশিক শাসনে শাসিতদের প্রতি শাসকদের অবমাননাকর দৃষ্টিভঙ্গি এই থিমের একটি বড় অংশ।

এই থিমগুলো গল্পটিকে ঔপনিবেশিক শাসনের অধীনে থাকা জনগণ এবং শাসকদের নৈতিক সংকট, মানবিক দ্বন্দ্ব এবং সাংস্কৃতিক বৈষম্যের প্রভাবকে গভীরভাবে তুলে ধরেছে।

Read More: Letter to Lord Chelmsford Rejecting Knighthood Bangla

Shooting an Elephant Bangla Summary

জর্জ অরওয়েলের “Shooting an Elephant” গল্পটি উপনিবেশবাদী শাসনের অমানবিক দিক এবং শাসক ও শাসিতদের মধ্যকার দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। এখানে লেখক তার নিজস্ব অভিজ্ঞতার আলোকে বার্মার (বর্তমান মিয়ানমার) রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন। গল্পটি বার্মায় লেখকের ব্রিটিশ পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে তার দায়িত্ব পালন করার সময় ঘটে যাওয়া একটি ঘটনাকে ঘিরে আবর্তিত হয়, যেখানে একটি পাগল হাতিকে গুলি করে মারতে হয়।

১. লেখক ও বার্মিজদের মধ্যে সম্পর্ক

গল্পের শুরুতে অরওয়েল বার্মিজদের প্রতি স্থানীয় জনগণের নেতিবাচক মনোভাব সম্পর্কে উল্লেখ করেন। লেখক, যিনি একজন ব্রিটিশ পুলিশ কর্মকর্তা, বার্মিজদের চোখে একজন উপনিবেশিক শাসকের প্রতিচ্ছবি বহন করেন। লেখক এবং অন্যান্য ইউরোপীয়দের প্রতি বার্মিজদের ঘৃণা এবং শত্রুতা স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে। যদিও কেউ সরাসরি তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে সাহস করে না, তবু তারা বিভিন্নভাবে শাসকদের অপমান করার চেষ্টা করে, যেমন—বাজারে ইউরোপীয় মহিলাদের পোশাকে পানের পিক ছোড়া। লেখকও এই ধরনের পরিস্থিতিতে নিজেকে একঘরে এবং অসহায় অনুভব করেন। বার্মিজ বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ব্যঙ্গ-বিদ্রুপও লেখকের প্রতি তাদের বিদ্বেষকে প্রতিফলিত করে।

২. লেখকের সাম্রাজ্যবাদের প্রতি অনীহা

গল্পটির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ লেখকের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি। তিনি সাম্রাজ্যবাদকে অত্যন্ত ঘৃণা করতেন এবং ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের নিপীড়নমূলক কার্যক্রমের বিরুদ্ধে ছিলেন। তবে চাকরির প্রয়োজনে তিনি এই দমনমূলক ব্যবস্থার অংশ হতে বাধ্য হন। তার বিবেকের মধ্যে চলা এই দ্বন্দ্বটি অত্যন্ত গভীরভাবে ফুটে উঠেছে। লেখক ব্রিটিশ শাসন দ্বারা সৃষ্ট অত্যাচার, যেমন—কারাগারের বন্দীদের উপর নির্যাতন, দেখার ফলে নিজেকে অপরাধী মনে করতে শুরু করেন। কিন্তু চাকরির দায়িত্ব থেকে মুক্তি পাওয়া তার পক্ষে সহজ ছিল না।

৩. পাগলা হাতির তাণ্ডব

গল্পের মূল ঘটনাটি ঘটে যখন একদিন একটি হাতি তার শৃঙ্খল ভেঙে শহরে প্রবেশ করে এবং প্রচণ্ড ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। হাতিটি কিছু কুঁড়েঘর গুড়িয়ে দেয়, গরু মারে এবং বাজারের দোকানপাট পিষে ফেলে। হাতির মাহুত তখনও বহু দূরে ছিল, এবং হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণে আনার মতো কোন ব্যবস্থাও ছিল না। এই পরিস্থিতিতে স্থানীয়রা অরওয়েলকে ডাক দেয়, যেন তিনি হাতিটিকে ঠেকাতে পারেন।

৪. লেখকের নৈতিক সংকট

লেখক প্রথমে হাতিটিকে গুলি করতে চান না, কারণ তিনি বুঝতে পারেন যে হাতিটি এখন শান্ত হয়েছে এবং আর তেমন ক্ষতি করছে না। কিন্তু স্থানীয় জনতার চাপ তাকে বাধ্য করে একটি সিদ্ধান্ত নিতে। জনতা লেখকের কাছ থেকে হাতিটিকে মারার প্রত্যাশা করে, এবং তিনি বুঝতে পারেন যে যদি তিনি তাদের প্রত্যাশা পূরণ না করেন, তবে জনতার রোষের মুখে পড়বেন। জনতার চোখে তিনি একজন শ্বেতাঙ্গ শাসক এবং তার হাতে বন্দুক থাকা মানেই তার হাতে ক্ষমতা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে লেখকের নৈতিক দায়বদ্ধতার প্রশ্নটি আরও জটিল হয়ে ওঠে।

৫. হাতিটিকে হত্যা

অবশেষে জনতার চাপে অরওয়েল হাতিটিকে গুলি করেন। প্রথম গুলিতে হাতিটি সঙ্গে সঙ্গে মারা যায় না, বরং ধীরে ধীরে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। লেখক হাতিটির ধীরে ধীরে মৃত্যুকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ধ্বংসের প্রতীক হিসেবে দেখান। হাতিটি যে বেদনাদায়ক মৃত্যুর শিকার হয়, তা লেখকের কাছে গভীর মানসিক আঘাত হিসেবে দেখা দেয়। এটি লেখকের জন্য একটি বিশাল নৈতিক বিজয় এবং পরাজয়ের মিশ্রণ।

৬. জনতার প্রতিক্রিয়া

হাতিটিকে গুলি করার পর জনতা উৎসাহিত হয় এবং তার চারপাশে ভিড় জমায়। বার্মিজ জনতা হাতির মৃতদেহ থেকে যা যা সম্ভব লুট করে নিয়ে যায়। পরে ব্রিটিশরা এ ঘটনাকে দুই দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখে। কেউ বলে অরওয়েল সঠিক কাজ করেছেন, আবার কেউ বলে হাতিটি অমূল্য ছিল এবং তা হত্যা করা উচিত হয়নি। তবে অরওয়েলের মনে হয়, কুলি মারা গিয়েছিল বলে তিনি হাতিটিকে গুলি করার একটি যৌক্তিক কারণ খুঁজে পেয়েছেন।

৭. উপনিবেশবাদের পরিপ্রেক্ষিতে গল্পের অর্থ

গল্পের মূল বিষয়বস্তু উপনিবেশবাদের প্রতি লেখকের বিরূপ মনোভাব। এখানে হাতিটির মৃত্যু ব্রিটিশ শাসনের প্রতীকী মৃত্যু হিসেবে উঠে এসেছে। লেখক নিজেই শাসনব্যবস্থার অংশ হলেও, তিনি শাসকদের অনৈতিক কাজের বিরুদ্ধে ছিলেন। উপনিবেশিক শাসক হিসেবে তার সিদ্ধান্তগুলো স্থানীয় জনগণের উপর প্রভাব ফেললেও, তার নিজের নৈতিকতা এবং বিবেকের সংঘর্ষ গল্পের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল।

এইভাবে, “Shooting an Elephant” একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক এবং সামাজিক প্রেক্ষাপটের ভিত্তিতে রচিত গল্প, যা ব্রিটিশ উপনিবেশবাদের বিপর্যয়কর প্রভাব ও শাসক এবং শাসিতের মধ্যে থাকা সাংস্কৃতিক ও নৈতিক সংঘর্ষকে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে উপস্থাপন করে।

English Summary

George Orwell’s “Shooting an Elephant” revolves around the inhuman aspects of colonial rule and the conflicts between the rulers and the ruled. Based on Orwell’s personal experience, the story is set in Burma (now Myanmar) and reflects the political and social situation of the time. The narrative follows a British police officer who is forced to shoot a rampaging elephant under challenging circumstances.

1. Relationship between the narrator and the Burmese

At the beginning of the story, Orwell describes the negative attitude of the local Burmese people towards the British colonizers. As a British police officer, the narrator is viewed as a symbol of colonial rule in the eyes of the Burmese. The tension between the Europeans and the Burmese is evident, as the locals harbor hatred and hostility towards their rulers. Though they do not openly rebel, they find subtle ways to insult and belittle the Europeans, like spitting betel juice at European women’s clothing in the marketplace. The narrator feels isolated and helpless in such situations. The mockery and scorn from Burmese Buddhist monks further reflect the locals’ animosity towards him.

2. The narrator’s disdain for imperialism

A key aspect of the story is the narrator’s own perspective. He despises imperialism and is strongly opposed to the oppressive nature of British rule. However, he is bound by his duty to serve as part of this oppressive system. This internal conflict is deeply portrayed as he witnesses the harsh consequences of British rule, such as the brutal treatment of prisoners. These experiences make him feel morally responsible for the cruelty inflicted by the British Empire, but escaping his job was not a viable option for him.

3. The rampaging elephant

The central incident of the story occurs when an elephant breaks free from its chains and wreaks havoc in a town. The elephant destroys several huts, kills livestock, and tramples market stalls. With the elephant’s mahout (keeper) far away, there is no immediate way to control the situation. The locals summon Orwell to deal with the problem, expecting him to take action.

4. The narrator’s moral dilemma

Initially, the narrator does not want to shoot the elephant, as he realizes the animal has calmed down and is no longer a threat. However, the pressure from the crowd forces him into a difficult decision. The local people expect him, as a white officer, to kill the elephant, and he feels trapped by their expectations. He understands that if he does not fulfill their expectations, he risks facing their anger and losing face. To the crowd, he represents authority, and holding a rifle signifies power. This situation deepens the narrator’s moral conflict.

5. Killing the elephant

Eventually, under immense pressure from the crowd, Orwell shoots the elephant. The first shot does not kill the animal instantly, and the elephant collapses slowly to the ground. The narrator describes the elephant’s agonizing death, which symbolizes the slow destruction of the British Empire. Watching the elephant suffer deeply impacts the narrator, representing both a moral victory and defeat for him.

6. Reaction of the crowd

After the elephant is shot, the crowd is thrilled and gathers around the dying animal. The Burmese people eagerly loot whatever they can from the elephant’s body. Later, the British officials have divided opinions about the incident—some believe Orwell did the right thing, while others think the elephant was too valuable to be killed. The narrator, however, justifies his action by reasoning that the elephant had killed a man earlier, giving him a valid cause to shoot it.

7. Colonialism’s meaning in the story

The central theme of the story is Orwell’s critique of colonialism. The elephant’s death symbolizes the inevitable collapse of British rule. Although the narrator is a part of the colonial system, he stands against the immoral actions of the rulers. His decisions, although affecting the local people, are shaped by his internal struggle between his morality and his duty.

Thus, “Shooting an Elephant” is a powerful story based on political and social contexts, depicting the devastating effects of British colonialism and the cultural and moral conflicts between the rulers and the ruled.

Author

  • George Orwell By Branch of the National Union of Journalists (BNUJ). - https://web.archive.org/web/20080608013945/http://www.netcharles.com/orwell/pics/orwell-unioncard.htm, Public Domain, https://commons.wikimedia.org/w/index.php?curid=2001660

    এরিক আর্থার ব্লেয়ার (জুন ২৫, ১৯০৩ - জানুয়ারি ২১, ১৯৫০) একজন কালোত্তীর্ণ ইংরেজ সাহিত্যিক ও রাজনৈতিক লেখক। অবিভক্ত ভারতের বাংলা প্রদেশের মতিহারিতে জন্ম হয়েছিল তার। বিশ্ব সাহিত্য অঙ্গনে তিনি জর্জ অরওয়েল ছদ্মনামে সমধিক পরিচিত। তার দুটি উপন্যাস - এনিমেল ফার্ম ও নাইন্টিন এইটি-ফোর - বিংশ শতাব্দীর সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থের তালিকায় স্থান পেয়েছে। তিনি আজীবন স্বৈরাচার ও একদলীয় মতবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। রিচার্ড ওয়ামেসলে ব্লেয়ার ও ইদা মাবেল লিমুজিন দম্পতির একমাত্র সন্তান অরওয়েল মাত্র ৪৬ বছর বয়সে যক্ষ্মারোগে মৃত্যুবরণ করেন।জীবন শৈশব ও কৈশোর এরিক আর্থার ব্লেয়ার ১৯০৩ সালের ২৫ জুন ব্রিটিশ ভারতের বাংলার মতিহারিতে একটি সুখী 'নিম্ন-উচ্চ-মধ্যবিত্ত' পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রপিতামহ চার্লস ব্লেয়ার ডরসেটের জ্যামাইকান প্ল্যান্টেশনের অনুপস্থিত মালিক ছিলেন। অরওয়েলের পিতা ছিলেন রিচার্ড ওয়ালমেসলে ব্লেয়ার, যিনি ভারতীয় সিভিল সার্ভিসের আফিম বিভাগে সাব-ডেপুটি আফিম এজেন্ট হিসেবে কাজ করতেন, চীনে বিক্রির জন্য আফিম উৎপাদন ও মজুত করার তত্ত্বাবধান করতেন। তার মা, ইডা মেবেল ব্লেয়ার (নি লিমুজিন), বার্মার মৌলমেইনে বেড়ে ওঠেন। এরিকের দুই বোন: মার্জোরি, পাঁচ বছরের বড়; এবং এভ্রিল, পাঁচ বছরের ছোট। এরিক যখন এক বছর বয়সে, তার মা তাকে এবং মার্জোরিকে ইংল্যান্ডে নিয়ে যান। এরিক তার মা এবং বোনদের সাথে বেড়ে ওঠেন এবং ১৯০৭ সালের মাঝামাঝি একবার ছাড়া, তিনি ১৯১২ সাল পর্যন্ত তার বাবাকে দেখেন নি। পাঁচ বছর বয়সী, এরিককে হেনলি-অন-টেমসের একটি কনভেন্ট স্কুলে ডে-বয় হিসাবে পাঠানো হয়েছিল। তার মা তাকে পাবলিক স্কুলে পড়াতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তার পরিবার ফি বহন করতে সক্ষম হয় নি। তার মামা চার্লস লিমুজিনের মাধ্যমে, ব্লেয়ার সেন্ট সাইপ্রিয়ানস স্কুল, ইস্টবোর্ন, ইস্ট সাসেক্সে বৃত্তি লাভ করেন। ১৯১১ সালের সেপ্টেম্বরে এসে তিনি পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য স্কুলে থাকেন, শুধুমাত্র স্কুল ছুটির সময় বাড়িতে ফিরতেন। যদিও তিনি হ্রাসকৃত ফি সম্পর্কে কিছুই জানতেন না, তবে তিনি শীঘ্রই বুঝতে পারলেন যে তিনি একজন দরিদ্র ঘর থেকে এসেছেন।

    View all posts

Leave a Comment