রাষ্ট্রের উৎপত্তি সম্পর্কে ঐতিহাসিক বা বিবর্তনমূলক মতবাদটি বর্ণনা কর

Introduction to Political Theory

প্রশ্নঃ রাষ্ট্রের উৎপত্তি সম্পর্কে ঐতিহাসিক বা বিবর্তনমূলক মতবাদটি বর্ণনা কর। অথবা, রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়েছে, সৃষ্টি হয়নি- উক্তিটি বিশ্লেষণ কর।

ভূমিকা

রাষ্ট্রের উৎপত্তি সংক্রান্ত বিবর্তনবাদ বা ঐতিহাসিক মতবাদ একটি গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্ব যা রাষ্ট্রের উদ্ভব ও বিকাশের ধারা বিশ্লেষণ করে। এই মতবাদ অনুসারে, রাষ্ট্র একদিনে সৃষ্টি হয়নি, বরং বিভিন্ন সামাজিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক পরিবর্তনের মাধ্যমে ধীরে ধীরে গঠিত হয়েছে। ঐতিহাসিক মতবাদ বা বিবর্তনমূলক মতবাদই রাষ্ট্রের উৎপত্তি সম্পর্কে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ও বিজ্ঞানসম্মত তত্ত্ব হিসেবে বিবেচিত হয়। রাষ্ট্রের উৎপত্তি একটি প্রাকৃতিক ও ঐতিহাসিক প্রক্রিয়ার ফল, যা বিভিন্ন ঘটনার সমন্বয়ে ঘটেছে।

মূলকথা

রাষ্ট্রের উৎপত্তি নিয়ে অনেক মতবাদ থাকলেও, ঐতিহাসিক বা বিবর্তনমূলক মতবাদ সর্বজনস্বীকৃত ও বৈজ্ঞানিকভাবে গ্রহণযোগ্য। এই মতবাদের মূল বক্তব্য হলো যে রাষ্ট্র একদিকে সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি নয়, অন্যদিকে পাশবিক শক্তির বল প্রয়োগের ফলও নয়। বরং এটি একটি বিবর্তনের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন ঘটনা প্রবাহের মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছে। গার্নার বলেছেন, রাষ্ট্র বিধাতার সৃষ্টি নয় এবং বার্জেস বলেছেন, রাষ্ট্র মানব সমাজের প্রগতির ফল। এটি কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান দ্বারা তৈরি হয়নি, বরং ক্রমবিকাশের মাধ্যমে গঠিত হয়েছে।

বিবর্তনের উপাদানসমূহ

রাষ্ট্রের বিবর্তন এক জটিল ও ধারাবাহিক প্রক্রিয়া, যেখানে বিভিন্ন উপাদানসমূহের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্রের কাঠামো, কার্যপ্রণালী, এবং বৈশিষ্ট্যগুলো সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয় এবং এই পরিবর্তনকে প্রভাবিত করে বিভিন্ন উপাদান। এই উপাদানসমূহ রাষ্ট্রের ঐতিহাসিক বিকাশে নির্ধারক ভূমিকা পালন করে। নিচে এই উপাদানগুলো বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো:

১. ভৌগোলিক পরিবেশ

রাষ্ট্রের বিকাশে ভৌগোলিক পরিবেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভূমি, জলবায়ু, প্রাকৃতিক সম্পদ, এবং ভূখণ্ডের প্রকারভেদ রাষ্ট্রের গঠন এবং উন্নয়নের ধারা নির্ধারণ করে। যেমন, নীল নদ বা গঙ্গা নদীর তীরবর্তী উর্বর ভূমিতে সভ্যতার বিকাশ ঘটেছে এবং এখানেই প্রাচীনতম রাষ্ট্রগুলোর উদ্ভব হয়। ভৌগোলিক পরিবেশের প্রভাবেই একটি অঞ্চল কৃষিভিত্তিক, বাণিজ্যিক বা সামরিক শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

২. জনসংখ্যা

রাষ্ট্রের জনসংখ্যা তার বিকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। জনসংখ্যার ঘনত্ব, বর্ণ, জাতি, ভাষা, এবং সংস্কৃতির বৈচিত্র্য রাষ্ট্রের গঠন এবং শাসনব্যবস্থার ওপর প্রভাব ফেলে। একক জাতি এবং সংস্কৃতির জনগোষ্ঠী নিয়ে গঠিত রাষ্ট্রগুলোর শাসনব্যবস্থা সহজ হয়, কিন্তু বহু জাতি বা বহু ভাষাভাষী রাষ্ট্রগুলোর ক্ষেত্রে শাসনব্যবস্থা জটিল হয়ে ওঠে। জনসংখ্যার পরিবর্তনের সাথে সাথে রাষ্ট্রের কাঠামো ও নীতিগুলোও পরিবর্তিত হয়।

৩. অর্থনৈতিক কাঠামো

অর্থনৈতিক কাঠামো রাষ্ট্রের বিকাশের একটি মুখ্য উপাদান। কৃষি, বাণিজ্য, শিল্প, এবং সেবাখাতের উন্নয়নের ওপর ভিত্তি করে রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক শক্তি নির্ধারিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, প্রাচীন যুগে কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি রাষ্ট্রের মূল ভিত্তি ছিল, কিন্তু শিল্পবিপ্লবের পর শিল্প ও বাণিজ্যভিত্তিক অর্থনীতি আধুনিক রাষ্ট্রের গঠনে প্রভাব ফেলেছে। রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক শক্তি তার সামরিক এবং রাজনৈতিক শক্তির সাথে সম্পর্কিত এবং রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারণেও এটি প্রভাব ফেলে।

Read More: প্লেটোর শিক্ষা পরিকল্পনার পরিচয় দাও। এটি কি বর্তমানেও গ্রহণযোগ্য?

৪. ধর্ম এবং সংস্কৃতি

ধর্ম এবং সংস্কৃতিও রাষ্ট্রের বিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থা, আইন, এবং নৈতিক মানদণ্ড অনেক সময় ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক প্রভাব দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। প্রাচীন এবং মধ্যযুগে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো শাসনব্যবস্থায় শক্তিশালী প্রভাব বিস্তার করত। বর্তমানেও রাষ্ট্রের সংস্কৃতি, মূল্যবোধ, এবং সামাজিক আচরণ ধর্মীয় বিশ্বাস দ্বারা প্রভাবিত হয়।

৫. রাজনৈতিক সংগঠন

রাষ্ট্রের রাজনৈতিক সংগঠন তার বিবর্তনের একটি কেন্দ্রীয় উপাদান। রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থা, সংবিধান, আইনসভা, বিচার বিভাগ, এবং প্রশাসনিক কাঠামো রাষ্ট্রের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং কার্যকারিতার ওপর প্রভাব ফেলে। প্রাচীন যুগের রাজতন্ত্র থেকে শুরু করে আধুনিক যুগের গণতন্ত্র পর্যন্ত রাজনৈতিক সংগঠনের পরিবর্তন রাষ্ট্রের বিকাশে গভীর প্রভাব ফেলেছে।

৬. যুদ্ধ এবং সামরিক শক্তি

যুদ্ধ এবং সামরিক শক্তি রাষ্ট্রের বিবর্তনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। একটি রাষ্ট্রের সামরিক শক্তি তার সীমানা রক্ষা, অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা বজায় রাখা, এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করতে সহায়তা করে। যুদ্ধের মাধ্যমে রাষ্ট্রের সীমানা সম্প্রসারণ বা নতুন রাষ্ট্রের উদ্ভব হতে পারে। সামরিক বিজয় এবং পরাজয় রাষ্ট্রের ইতিহাস এবং ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

৭. প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞান

প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞান রাষ্ট্রের বিকাশের একটি মুখ্য উপাদান। প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি রাষ্ট্রের অর্থনীতি, সামরিক শক্তি, এবং সামাজিক কাঠামোকে প্রভাবিত করে। উদাহরণস্বরূপ, শিল্পবিপ্লবের মাধ্যমে ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলোর শক্তিশালী হওয়া এবং আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে যোগাযোগ, প্রশাসন, এবং শাসনব্যবস্থার উন্নতি রাষ্ট্রের বিকাশকে ত্বরান্বিত করেছে।

Read More: আইন কী? আইনের উৎসসমূহ কী কী?

রাষ্ট্রের ঐতিহাসিক বিবর্তন

রাষ্ট্রের উৎপত্তি ও বিকাশ সম্পর্কে বিভিন্ন মতবাদের মধ্যে ঐতিহাসিক বা বিবর্তনমূলক মতবাদ সবচেয়ে বিজ্ঞানসম্মত এবং সর্বজনস্বীকৃত। রাষ্ট্রের বিবর্তন দীর্ঘ সময় ধরে বিভিন্ন ধাপ অতিক্রম করে বর্তমান অবস্থানে এসে পৌঁছেছে। মানব সমাজের আদিম অবস্থা থেকে আধুনিক রাষ্ট্র গঠনের এই প্রক্রিয়াকে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে অধ্যাপক গ্যাটেল ছয়টি প্রধান ধাপ উল্লেখ করেছেন, যা নিম্নরূপ:

১. গােত্র রাষ্ট্র

গােত্র রাষ্ট্র হলো রাষ্ট্রের প্রাথমিক ধাপ। এই ধাপটি পরিবারের উপর ভিত্তি করে গঠিত হয়। একাধিক পরিবার মিলে গােত্রের সৃষ্টি করে এবং গােত্রের নেতা বা গােত্রপতি কর্তৃত্ব স্থাপন করেন। গােত্র রাষ্ট্রে ধর্ম এবং আত্মীয়তার বন্ধন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যেখানে গােত্রপতির আদেশকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হতো। এই ধাপেই রাষ্ট্রের প্রাথমিক কাঠামো গড়ে ওঠে।

২. প্রাচ্য সাম্রাজ্য

গােত্র রাষ্ট্রের পরবর্তী ধাপ হলো প্রাচ্য সাম্রাজ্য। নীল নদ, ফোরাত, দোজলা, এবং গঙ্গার মতো উর্বর নদীর তীরে গড়ে ওঠা সভ্যতাগুলিতে প্রাচ্য সাম্রাজ্যের উৎপত্তি হয়। কৃষিকাজের সুবিধার্থে মানুষ এসব অঞ্চলে বসতি স্থাপন করে এবং এই একত্রিত বসবাসের ফলে সাম্রাজ্যের বিকাশ ঘটে। এই সাম্রাজ্যগুলোই পরবর্তীতে শক্তিশালী রাষ্ট্রের রূপ ধারণ করে, যেমন মিসর, ব্যাবিলন, এবং সিরিয়া।

৩. গ্রিক নগররাষ্ট্র

গ্রিক নগররাষ্ট্র হলো রাষ্ট্রের বিবর্তনের তৃতীয় ধাপ, যা খ্রিষ্টপূর্ব যুগে গ্রীসে বিকাশ লাভ করে। গ্রিসের অনুকূল ভৌগোলিক পরিবেশ এবং স্বনির্ভর গ্রামসমূহের সমন্বয়ে নগররাষ্ট্রের উদ্ভব ঘটে। এ ধাপেই প্রথমবারের মতো স্বাধীন ও স্বায়ত্তশাসিত নগররাষ্ট্র গড়ে ওঠে, যেখানে নাগরিকরা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতেন। গ্রিক নগররাষ্ট্রগুলোই পরবর্তীতে আধুনিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ভিত্তি স্থাপন করে।

৪. রােমান বিশ্ব সাম্রাজ্য

গ্রিসের নগররাষ্ট্রের বিকাশের পর রোমান সাম্রাজ্যের উদ্ভব হয়। রোম একটি ছোট নগররাষ্ট্র হিসেবে শুরু হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি বিশাল সাম্রাজ্যে পরিণত হয়। রোমান সাম্রাজ্য কেন্দ্রীভূত শাসনব্যবস্থা, আইনের শৃঙ্খলা, এবং সাম্রাজ্যিক সম্প্রসারণের জন্য পরিচিত ছিল। রোমান সাম্রাজ্যের রাজনৈতিক ও সামাজিক কাঠামো পরবর্তীতে ইউরোপীয় রাষ্ট্রব্যবস্থার ভিত্তি স্থাপন করে।

৫. সামন্ত রাষ্ট্র

রোমান সাম্রাজ্যের পতনের পর ইউরোপে সামন্ততান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার উদ্ভব ঘটে। সামন্ততান্ত্রিক যুগে ক্ষমতা স্থানীয় সামন্তদের হাতে কেন্দ্রীভূত হয় এবং অর্থনীতির প্রধান ভিত্তি হিসেবে ভূমির ব্যবহার শুরু হয়। সামন্তপ্রভুরা নিজ নিজ ভূ-খণ্ডে প্রায় স্বাধীন শাসক হিসেবে শাসন করতেন। সামন্তবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থার মাধ্যমে সামাজিক ও রাজনৈতিক কাঠামো এক নতুন রূপ ধারণ করে, যা মধ্যযুগের ইউরোপীয় সমাজব্যবস্থার প্রধান বৈশিষ্ট্য হয়ে ওঠে।

৬. জাতীয় রাষ্ট্র

সামন্ততন্ত্রের পরবর্তী ধাপ হলো জাতীয় রাষ্ট্রের উদ্ভব। মধ্যযুগের শেষদিকে এবং রেনেসাঁর সময়কাল থেকে জাতীয় রাষ্ট্রের ধারণা বিকাশ লাভ করে। জাতীয় রাষ্ট্র গঠনের প্রক্রিয়ায় একক জাতি, ভাষা, সংস্কৃতি, এবং ভূখণ্ডের মানুষ একত্রিত হয়ে কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিষ্ঠা করে। আধুনিক যুগে জাতীয় রাষ্ট্রের ধারণা পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে গৃহীত হয় এবং এভাবেই আধুনিক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপিত হয়।

বিবর্তন প্রক্রিয়া ও আধুনিক রাষ্ট্রের উদ্ভব

রাষ্ট্রের বিবর্তন প্রক্রিয়া শুধু রাজনৈতিক নয়, সামাজিক, ধর্মীয়, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের মাধ্যমেও প্রভাবিত হয়েছে। আদিম গােত্র রাষ্ট্র থেকে শুরু করে প্রাচ্য সাম্রাজ্য, গ্রিক নগররাষ্ট্র, রােমান সাম্রাজ্য, এবং সামন্ত রাষ্ট্রের বিবর্তনের ধারায় আধুনিক জাতীয় রাষ্ট্রের উদ্ভব ঘটে। এই দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রাষ্ট্র একটি সংগঠিত ও প্রতিষ্ঠিত সামাজিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে, যা আজকের বিশ্বে শৃঙ্খলা, শান্তি, এবং আইনের শাসন নিশ্চিত করে।

Read More: রাষ্ট্রবিজ্ঞান অধ্যয়নের পদ্ধতিসমূহ আলোচনা কর

উপসংহার

উপসংহার বলতে গেলে বলা যায়, বিবর্তনবাদ অন্যান্য মতবাদের মতো একদেশদর্শী নয়; বরং এটি বিভিন্ন মতবাদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বহুমাত্রিক তত্ত্ব। রাষ্ট্রের বিকাশের প্রক্রিয়ায় একাধিক উপাদান জড়িত, যেমন যুদ্ধের মাধ্যমে বলপ্রয়োগ, ধর্মের মধ্যে ঐশ্বরিক মতবাদ, অর্থনৈতিক কাঠামোর পরিবর্তন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তন ইত্যাদি। প্রতিটি উপাদান রাষ্ট্রের কাঠামো এবং কার্যপ্রণালীকে প্রভাবিত করেছে এবং এই সমন্বিত প্রভাব রাষ্ট্রের বিবর্তনের পথে নিত্য নতুন পরিবর্তন এনেছে।

রাষ্ট্র কোনো একক উপাদানের দ্বারা সৃষ্ট নয়; বরং এটি বহু উপাদানের একটি বিবর্তিত ফল। সভ্যতার সূচনালগ্ন থেকে আধুনিক অবস্থায় আসতে রাষ্ট্র বহু পর্যায় অতিক্রম করেছে। এই দীর্ঘ বিবর্তন প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন উপাদান প্রভাব ফেলেছে, যার ফলশ্রুতিতে আজকের আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। রাষ্ট্রের এই বিবর্তন প্রক্রিয়া এখনও চলমান এবং ভবিষ্যতেও বিভিন্ন নতুন উপাদান যুক্ত হয়ে রাষ্ট্রের গঠন ও কার্যপ্রণালীকে আরও পরিবর্তিত করবে।

বিবর্তনের এই ধারা থেকে আমরা শিখতে পারি যে, রাষ্ট্রের সাফল্য বা স্থায়িত্ব কোনো একক উপাদানের ওপর নির্ভর করে না। এটি একটি ধারাবাহিক এবং বহুমুখী প্রক্রিয়া, যেখানে বিভিন্ন উপাদান একসাথে কাজ করে রাষ্ট্রকে শক্তিশালী এবং স্থিতিশীল করে তোলে। আধুনিক রাষ্ট্রের সাফল্য তার ইতিহাস, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, প্রযুক্তি, এবং সামাজিক কাঠামোর সমন্বিত বিকাশের ওপর নির্ভর করে।

 

Leave a Comment